তেল খাঁটি নাকি ভেজাল মিশানো? বুঝবেন যেভাবে, জেনেনিন টিপস

বাজার থেকে আমরা যেসব খাবার কিনে খাই, তা খাঁটি নাকি ভেজাল সে সম্পর্কে আমাদের ধারণা থাকে না। অপরদিকে বেশিরভাগ খাবারই থাকে ভেজালমিশ্রিত। মশলা থেকে শুরু করে দুগ্ধজাত খাবার- নিশ্চিন্তে খাওয়ার আগে মনে দ্বিধা জাগেই। এই ভেজালের তালিকা থেকে বাদ যাচ্ছে না ভোজ্যতেলও। আমরা রান্নার কাজে যেসব তেল ব্যবহার করি তার মধ্যে সরিষার তেল অন্যতম। তবে শুধু খাওয়ার জন্যই নয়, এই তেল ব্যবহার করা হয় আরও অনেক কাজে। ত্বক ও চুলের যত্নেও সরিষার তেলের ব্যবহার করেন অনেকে। আর সরিষার তেলের দামটাও কিন্তু কম নয়। নিত্য প্রয়োজনীয় সব পণ্যের মূল্য এখন ঊর্ধ্বমুখী। কষ্টের টাকা নষ্ট করে ভেজাল খাবার কেনার আগে এটি চিনতে পারা জরুরি।

খাবার তৈরিতে সরিষার তেলের পাশাপাশি জলপাই ও নারিকেল তেলও ব্যবহার করা হয় অনেক সময়। এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী অতিরিক্ত লাভের লোভে পড়ে এসব তেলে ভেজাল মিশিয়ে থাকেন। কোন তেলে কতটা ভেজাল মেশানো হয়েছে তা খালি চোখে দেখে বোঝা সম্ভব হয় না। তবে সুস্থ থাকার জন্য ভেজাল খাবার এড়িয়ে চলার বিকল্প নেই। রান্নাসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত এসব তেলে ভেজাল রয়েছে কি না তা বোঝার জন্য কয়েকটি উপায় রয়েছে। সেসব উপায় জানা থাকলে আপনি সহজেই তেলের মান পরীক্ষা করতে পারবেন। সরিষার তেল পরীক্ষার জন্য মেনে চলতে পারেন এই তিন পদ্ধতি-

১. ফ্রিজিং পরীক্ষা

প্রথমে অন্তত এককাপ সরিষার তেল নিয়ে ফ্রিজে রেখে দিতে হবে দুই-তিন ঘণ্টা। এরপর সেই তেলের কাপ বের করে নিন। যদি তেলের উপরে সাদা রং জমে ভাসতে থাকে তবে বুঝে নেবেন এই তেল মোটেই খাঁটি নয়, ভেজালযুক্ত। এই তেল রান্না বা অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করবেন না।

২. আঙুলের সাহায্যে পরীক্ষা

আপনার ব্যবহৃত সরিষার তেল খাঁটি কি না তা বোঝার জন্য আঙুলের সাহায্যে পরীক্ষা করতে পারেন। আপনার হাতের তালুতে কিছুটা তেল নিয়ে ভালোভাবে ঘষুন। কিছুক্ষণ ঘষার পরে যদি অন্যরকম কোনো গন্ধ বা রঙের অস্তিত্ব পান তবে বুঝে নেবেন এই তেল খাঁটি নয়। এতে যোগ করা হয়েছে চিটচিটে কোনো পদার্থ।

৩. রং পরীক্ষা

সরিষার তেল খাঁটি কি না তা বোঝার জন্য এই পরীক্ষাও একটি কার্যকরী উপায়। সেজন্য প্রথমে একটি টেস্ট টিউবে পাঁচ মিলি সরষের তেল নিতে হবে। এরপর তাতে যোগ করুন পাঁচ মিলি নাইট্রিক অ্যাসিড। যদি আপনার ব্যবহৃত তেল খাঁটি হয় তবে রং অপরিবর্তিত থাকবে। আর যদি ভেজালযুক্ত হয় তবে অ্যাসিড লেয়ারের রঙ কমলা-হলুদ থেকে লাল হবে।

জলপাই তেলের পরীক্ষা

বিভিন্ন খাবার তৈরি এবং ত্বকের যত্নে ব্যবহৃত হয় জলপাই তেল। এই তেলে ভেজাল রয়েছে কি না তা বোঝার জন্য প্রথমে একটি কাঁচের জারে দুই-চার টেবিল চামচ জলপাই তেল নিন। এরপর জারের মুখ ভালোভাবে আটকে দিন। জারটি অন্তত চব্বিশ ঘণ্টা ফ্রিজে রেখে দিন। যদি তেল হিমশীতল হয় তবে বুঝে নেবেন জলপাই তেল পুরোপুরি খাঁটি ও ভেজালমুক্ত।

নারিকেল তেলের পরীক্ষা

নারিকেল তেল খাঁটি কি না তা বোঝার জন্য প্রথমে একটি স্বচ্ছ কাঁচের পাত্রে খানিকটা তেল নিন। এবার সেই পাত্র ফ্রিজে রাখুন অন্তত আধঘণ্টার জন্য। ফ্রিজে রাখার পর তেল জমে যাবে। আর যদি নারিকেল তেলে কোনোরকম ভেজাল থাকে তবে তেলের ভেতরে আলাদা স্তর দেখতে পাবেন।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy