গলায় মাছের কাঁটা? বাঙালি মাত্রই এ সমস্যার শিকার, জেনে নিন দ্রুত মুক্তির সহজ উপায়

বাঙালিদের মাছের প্রতি ভালোবাসা যেমন চিরন্তন, তেমনই মাছের কাঁটা গলায় ফোটাটাও যেন এক অনিবার্য অভিজ্ঞতা। অসাবধানতাবশত বা তাড়াহুড়ো করে খেতে গিয়েই এই বিপত্তি ঘটে। গলার মধ্যে অস্বস্তি, খচখচ করা থেকে শুরু হয় যত ঝামেলা। এই পরিচিত যন্ত্রণা থেকে নিমেষে মুক্তি পাওয়ার জন্য কিছু ঘরোয়া এবং সহজ পদ্ধতি রয়েছে, যা জেনে রাখা প্রতিটি বাঙালির জন্যই অত্যন্ত উপকারী।

কাঁটা নামানোর আধুনিক ও ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতিসমূহ:

১. কোক বা সোডা জাতীয় পানীয়: এটি কাঁটা নামানোর একটি আধুনিক কৌশল। গলায় মাছের কাঁটা বিঁধলে এক নিঃশ্বাসে যতটা সম্ভব কোক বা অন্য কোনো সোডা জাতীয় পানীয় পান করুন। ধারণা করা হয়, এর কার্বন ডাইঅক্সাইড কাঁটাকে নরম করে বা তাকে ধাক্কা দিয়ে নামিয়ে দিতে সাহায্য করে।

২. অলিভ অয়েল: তেল একটি পিচ্ছিল পদার্থ। এক চামচ অলিভ অয়েল কাঁচা খেলেও কোনো ক্ষতি নেই। এটি গলায় বিঁধে থাকা কাঁটাকে পিছলে নামিয়ে দিতে সাহায্য করে।

৩. পাতি লেবু: লেবুর সাইট্রিক অ্যাসিড মাছের কাঁটাকে নরম করে তুলতে পারে। একটি লেবু কেটে, নুনে মাখিয়ে তার রস পান করলে কাঁটা নরম হয়ে গলা থেকে নেমে যেতে পারে।

৪. কলা: কলার পিচ্ছিল প্রকৃতি গলায় আটকে থাকা কাঁটা নামাতে দারুণ কার্যকর। গলায় কাঁটা বিঁধলে একটি কলা চিবিয়ে গিলে ফেলুন। অনেক সময় কাঁটা নেমে গেলেও টের পাওয়া যায় না।

৫. ভিনিগার: জলের সঙ্গে সামান্য ভিনিগার মিশিয়ে পান করলে এটি পাতি লেবুর মতোই কাজ করে। ভিনিগারের অম্লতা কাঁটাকে নরম করে সহজে নামিয়ে দিতে সাহায্য করে।

৬. হোমিওপ্যাথি ওষুধ (সাইলেশিয়া): যারা বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতিতে বিশ্বাসী, তারা বাড়িতে এক শিশি সাইলেশিয়া রাখতে পারেন। বিশেষ করে কই মাছের মতো শক্ত কাঁটা গলাতে এই হোমিওপ্যাথি বড়ি কার্যকর হতে পারে বলে প্রচলিত আছে।

৭. সাদা ভাত: শুকনো সাদা ভাতের ছোট ছোট বল বানিয়ে জল দিয়ে দ্রুত গিলে ফেলুন। এটি কাঁটাকে পেটের দিকে ঠেলে নামিয়ে দিতে সাহায্য করে। তবে শুধু শুধু শুকনো ভাত খেলে হিতে বিপরীত হতে পারে।

৮. জল: যদি উপরের কোনো উপাদানই হাতের কাছে না থাকে, তবে অনেক পরিমাণ জল পান করা উচিত। হালকা গরম জলে সামান্য নুন মিশিয়ে পান করলে কাঁটা নরম হয়ে তাড়াতাড়ি গলা থেকে নেমে যেতে পারে।

সতর্কতা:
এই পদ্ধতিগুলো মূলত ছোট ও মাঝারি আকারের কাঁটার জন্য কার্যকর। যদি কাঁটা খুব বড় হয়, তীব্র ব্যথা হয়, বা উপরের কোনো পদ্ধতিতেই কাজ না হয়, তাহলে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অপরিহার্য।

মাছের কাঁটা গলায় ফোটা বাঙালির দৈনন্দিন জীবনের এক সাধারণ অভিজ্ঞতা। এই সহজ ঘরোয়া পদ্ধতিগুলো জেনে রাখলে অপ্রত্যাশিত সমস্যায় দ্রুত স্বস্তি পাওয়া যেতে পারে। তবে গুরুতর অবস্থায় অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy