চকলেট! এই শব্দটি শুনলেই জিভে জল আসে। ছোট থেকে বড়, প্রায় সকলেরই পছন্দের খাবার এটি। তবে এতদিন আমরা জেনে এসেছি, চকলেট খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। কিন্তু সম্প্রতি একটি গবেষণায় উঠে এসেছে এক নতুন তথ্য – নিয়মিত ডার্ক চকলেট খেলে সুস্থ থাকা সম্ভব!
গবেষণায় দেখা গেছে, উচ্চমাত্রার কোকো সমৃদ্ধ ডার্ক চকলেট ইনসুলিনের উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করে। এর ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে। কোকোতে এমন কিছু উপাদান বিদ্যমান যা বিটা কোষের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে এবং ইনসুলিন উৎপাদনে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
শুধু তাই নয়, ১০০ গ্রাম ডার্ক চকলেটে প্রায় ১১ গ্রাম ফাইবার, দৈনিক চাহিদার ৬৭ শতাংশ আয়রন, ৫৮ শতাংশ ম্যাগনেসিয়াম, ৮৯ শতাংশ কপার এবং প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, জিঙ্ক ও সেলেনিয়াম থাকে। এই উপাদানগুলো শরীরের গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়াতেও সাহায্য করে।
ডার্ক চকলেট অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের একটি চমৎকার উৎস। এটি শরীরের অভ্যন্তরে থাকা ক্ষতিকর পদার্থ দূর করতে সহায়ক। এছাড়াও, এতে ফ্লেভোনল নামক একটি উপাদান রয়েছে যা ধমনির আবরণে নাইট্রিক অক্সাইড তৈরি করে। এই গ্যাস ধমনির চাপ কমায় এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা রাখে। পাশাপাশি, শরীরে রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধিতেও ডার্ক চকলেটের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
নিয়মিত ডার্ক চকলেট খাওয়ার অভ্যাস রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এর ফলে হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতা বাড়ে এবং বিভিন্ন ধরনের হৃদরোগের ঝুঁকিও হ্রাস পায়।
কোকোতে ক্যাফিন এবং থিয়োব্রোমাইন নামক দুটি উপকারী উপাদানও পাওয়া যায়। উচ্চমাত্রার কোকোযুক্ত চকলেট খেলে মস্তিষ্কে অক্সিজেনসমৃদ্ধ রক্তের সরবরাহ বৃদ্ধি পায়। এর ফলে স্মৃতিশক্তি, মনোযোগ এবং বুদ্ধির মতো কগনেটিভ ফাংশনের উন্নতি ঘটে।
তবে মনে রাখতে হবে, উপকারিতা পেতে হলে প্রতিদিন প্রায় ১০০ গ্রাম ডার্ক চকলেট খেতে হবে এবং তা অবশ্যই চিনিমুক্ত বা স্বল্প চিনিযুক্ত হতে হবে। অতিরিক্ত পরিমাণে চকলেট খাওয়া কিন্তু স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই পরিমিত পরিমাণে ডার্ক চকলেট খান এবং সুস্থ থাকুন!