গ্রীষ্মের দাবদাহে শরীর ও মন—দুটোই ক্লান্ত হয়ে পড়ে। তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্লান্তি, হিটস্ট্রোক, ডিহাইড্রেশন, মাথাব্যথা, বমিভাবের মতো একাধিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই গরমকালে শরীরকে সুস্থ রাখতে কিছু সহজ নিয়ম মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি।

পর্যাপ্ত জল পান করুন:

গরমকালে শরীর ঘামের মাধ্যমে প্রচুর পরিমাণে জল হারায়। তাই ডিহাইড্রেশন এড়াতে প্রথমেই খেয়াল রাখতে হবে আপনি পর্যাপ্ত জল পান করছেন কিনা। প্রতিদিন অন্তত ৩ থেকে ৪ লিটার জল পান করা আবশ্যক। শুধু জলই নয়, এর পাশাপাশি ডাবের জল, লেবুর শরবত ও জলযুক্ত ফলের রসও পান করুন। এই পানীয়গুলো শরীরকে ঠান্ডা রাখে এবং শরীরের ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।

পোশাক নির্বাচনে সচেতন হোন:

গরমের সময় পোশাকের দিকেও বিশেষভাবে নজর দেওয়া উচিত। হালকা রঙের, ঢিলেঢালা এবং সুতির পোশাক পরিধান করুন। এই ধরনের পোশাক শরীরে বাতাস চলাচল করতে দেয় এবং ঘাম সহজে শুকিয়ে যায়। রোদে বের হলে অবশ্যই ছাতা বা টুপি ব্যবহার করুন। এছাড়াও, ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মি থেকে রক্ষা করতে সানগ্লাস ও সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে ভুলবেন না।

রোদে ঘোরাঘুরি কমান:

গরমকালে দীর্ঘক্ষণ রোদে থাকা উচিত নয়। বিশেষ করে দুপুর ১২টা থেকে ৩টের মধ্যে সূর্যের তাপ সবচেয়ে তীব্র থাকে। এই সময় বাড়ির বাইরে বের না হওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। নিতান্তই যদি বেরোতে হয়, তাহলে অবশ্যই মাথা ঢেকে বেরোন এবং সঙ্গে জল রাখুন। ছাতা নেওয়াও জরুরি।

খাবার নির্বাচনে সতর্কতা:

গরমের সময় খাবারের দিকেও সতর্ক থাকতে হবে। অতিরিক্ত ঝাল, তেল-মসলা এবং ডিপ ফ্রায়েড খাবার এই সময় এড়িয়ে চলুন। এর পরিবর্তে তাজা শাকসবজি, টক দই এবং জলযুক্ত ফল যেমন তরমুজ, বাঙ্গি ও শসা বেশি করে খান। একসঙ্গে বেশি পরিমাণে খাবার খাওয়া থেকেও বিরত থাকুন, কারণ বেশি খেলে শরীর আরও গরম হয়ে ওঠে।

ব্যায়াম করার সঠিক সময়:

যদি ব্যায়াম করার অভ্যাস থাকে, তাহলে গরমকালে তা সকালে অথবা সন্ধ্যায় করুন। দুপুরে বা প্রচণ্ড গরমের সময় ব্যায়াম করলে শরীরে হিটস্ট্রোকের আশঙ্কা থাকে।

শিশু ও বয়স্কদের জন্য বিশেষ সতর্কতা:

শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে আরও বেশি সাবধানতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। তাদের শরীর সহজে তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে না। তাই তাদের জলখাবার, পোশাক এবং ঘরের তাপমাত্রা নিয়েও বিশেষভাবে সচেতন থাকতে হবে।

অস্বাভাবিক উপসর্গ দেখলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন:

সবশেষে, যদি কোনো অস্বাভাবিক উপসর্গ যেমন মাথা ঘোরা, অতিরিক্ত দুর্বল লাগা অথবা খুব কম প্রস্রাব হওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

এই সহজ নিয়মগুলি মেনে চললেই গরমকালে নিজেকে সুস্থ ও সতেজ রাখা সম্ভব। তাই আর দেরি না করে আজ থেকেই এই নিয়মগুলো অনুসরণ করা শুরু করুন।