বাজারে এখন গাজর সহজলভ্য। গাজর স্বাদে অত্যন্ত সুস্বাদু, পুষ্টিকর ও আঁশসমৃদ্ধ শীতকালীন সবজি। যদিও এটি সারা বছরই পাওয়া যায়। জুস, তরকারি ও সালাদ হিসেবে গাজর সবাই কমবেশি খান। গাজর শরীরের জন্য অনেক উপকারী। এতে এমন কিছু পুষ্টি উপাদান আছে, যা শরীরের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করে।
গাজর অতি পুষ্টিসমৃদ্ধ একটি সবজি। এতে উচ্চমানের বিটা ক্যারোটিন, ভিটামিন এ, মিনারেলস ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে। তবে এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে উপকারটি হলেঅ দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি পাওয়া। এ ছাড়াও আছে আরও অনেক স্বাস্থ্যগত সুবিধা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গাজর থেকে সর্বোচ্চ পুষ্টি পেতে কাঁচা গাজরের খাওয়াই সর্বোত্তম। তাই গাজরের জুস খেলেই মিলবে এতে থাকা সর্বোচ্চ পুষ্টি উপাদান। প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস গাজরের জুস ৯ সমস্যার সমাধান করবে-
>> মেটাবোলিজম বৃদ্ধি করে গাজরে থাকা পুষ্টিগুণ। গাজরের ভিটামিন বি দেহের চর্বি, প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেট ভেঙে তাদের শক্তিতে পরিণত করে। এর ডায়েটারি ফাইবারও আছে, যা আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণ করবে।
>> এতে থাকা ভিটামিন এ চোখের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রাতকানা রোগ থেকে রক্ষার পাশাপাশি চোখের সুরক্ষাও দিয়ে থাকে ভিটামিন এ। বয়সজনিত মলিকুলার ডিজেনারেশনের মতো সমস্যা থেকেও গাজরের জুস আপনাকে রক্ষা করবে।
>> এই করোনাকালে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো খুবই জরুরি। গাজরে আছে ক্যারোটিনয়েড। যা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
দেহের রোগ প্রতিরোধের জন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো রক্তে থাকা শ্বেতকণিকা। এটি টি সেলের বৃদ্ধি ও উৎপাদনকে তরান্বিত করার মাধ্যমে দেহের সুরক্ষা নিশ্চিত করে।
>> ক্যানসারের ঝুঁকি কমায় গাজর। এতে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। অর্থাৎ দেহে থাকা ক্ষতিকর ফ্রি র্যাডিকেলকে নিষ্ক্রিয় করে গাজর। গাজরের ডায়েটারি ফাইবারও ক্যানসারের ঝুঁকি নিরাময় করে।
>> গাজরের ভিটামিন সি, ই ও কে ত্বককে করে তোলে স্বাস্থ্যোজ্জল। এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্ষতিকর সূর্যরশ্মিকে প্রতিহত করে ত্বককে সুরক্ষিত রাখে। কোলাজেন উৎপাদনের মাধ্যমে বয়সের ছাপও কমাতে পারে এই গাজর।
>> গর্ভাবস্থায় খুব উপকারী গাজর। এ সময় মায়েদের ফলিক অ্যাসিড, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ভিটামিন এ, ও ভিটামিন সি এর চাহিদা বেড়ে যায়। গাজর এ সবগুলো উপাদানে ভরপুর।
>> মস্তিষ্কের সক্ষমতা বৃদ্ধি করে এই সবজি। গাজরের বিশেষ অ্যান্টি অক্সিডেন্ট বিটা ক্যারোটিন মস্তিষ্কের সক্ষমতা বাড়িয়ে আপনাকে আরও বুদ্ধিমত্তা করে তুলতে পারে।
>> হৃদপিণ্ডকে সুরক্ষা দেয় গাজর। এতে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট হৃদযন্ত্র ভালো রাখতে সাহায্য করে। পলিফেনল, ভিটামিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ গাজরের জুস রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম।
>> বেশি পরিমাণ বিটা ক্যারোটিন ও ভিটামিন সি খেলে ফুসফুসের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়। এমনকি শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যা প্রতিরোধ করে।
পাশাপাশি শ্বাস-প্রশ্বাসের বিভিন্ন সমস্যা যেমন- অ্যাজমা, ব্রংকাইটিস ও এমফিসেমা প্রতিরোধ করে। অর্থাৎ নিয়মিত গাজরের জুস খেলে ফুসফুসকে বিভিন্ন রোগ থেকেও রক্ষা করতে পারবেন।