“রক্তের টান ভুলে রক্তারক্তি!”-দাদাকে ‘খুন’ করল ভাই, বাঁচাতে গিয়ে জখম আরও ১

সাতসকালে দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন থানায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। পৈতৃক ভিটে আর চাষের জমি নিয়ে বিবাদের জেরে তুতো ভাইয়ের হাতে প্রাণ হারাতে হলো আব্দুল করিম সরকার (৪০) নামে এক ব্যক্তিকে। দাদাকে বাঁচাতে গিয়ে গুরুতর জখম হয়েছেন আরও এক ভাই আব্দুল মান্নান সরকার (৩৮)। শুক্রবার সকালে জেলার চক হোসেন নালিপাড়া এলাকায় এই নৃশংস ঘটনায় স্তম্ভিত স্থানীয় বাসিন্দারা।

জমি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিবাদ

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, আব্দুল করিমদের বাবারা মোট ৬ ভাই ও ২ বোন। দীর্ঘ সময় ধরে পৈতৃক জমি বণ্টন নিয়ে আব্দুলের পরিবারের সঙ্গে কাকার ছেলে ফারুক মিঞার বিরোধ চলছিল। শুক্রবার সকালে বিবাদ চরম সীমায় পৌঁছায় যখন ফারুক তাঁর বাবা-মা ও ভাইকে নিয়ে জোরপূর্বক বিতর্কিত জমিতে চাষ করতে নামেন।

গলায় ছুরি বসিয়ে দিল ভাই!

আব্দুল করিম ও মান্নান চাষে বাধা দিতে গেলে শুরু হয় বচসা। অভিযোগ, সেই সময় অতর্কিতে ফারুক তাঁর কাছে থাকা ধারালো ছুরি আব্দুল করিমের গলায় বসিয়ে দেন। দাদাকে বাঁচাতে ছুটে আসেন মান্নান, কিন্তু তাঁকেও রেয়াত করেনি ফারুক। দুই ভাইকে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে রেখে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়।

উদ্ধার ও মৃত্যু

আর্তনাদ শুনে গ্রামবাসীরা ছুটে এসে দুই ভাইকে উদ্ধার করে গঙ্গারামপুর মহকুমা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকরা আব্দুল করিম সরকারকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। বর্তমানে আব্দুল মান্নান আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন।

পুলিশি তদন্ত ও তৎপরতা

খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় তপন থানার পুলিশ। মাটি থেকে উদ্ধার হয়েছে হামলায় ব্যবহৃত ছুরির ভাঙা অংশ। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আজমতপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রামপ্রসাদ রায় এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে দোষীদের ফাঁসির দাবি করেছেন।

জেলা পুলিশ সুপার চিন্ময় মিত্তল জানিয়েছেন, অভিযুক্ত ফারুক মিঞা ও তাঁর পরিবারের খোঁজে চিরুনি তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। জমি নিয়ে বিবাদ কীভাবে খুনের পর্যায়ে পৌঁছাল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy