নির্বাচনের আগে শুধু ডাঙ্গা নয়, এবার গভীর সমুদ্রেও ভারত-বিরোধী সুর চড়া করছে বাংলাদেশ। গত দুই মাস ধরে বঙ্গোপসাগরে যে ‘অস্বাভাবিক প্যাটার্ন’ লক্ষ্য করা যাচ্ছিল, গত ১৫ ডিসেম্বর তা এক নৃশংস রূপ নিল। অভিযোগ, ১৬ জন ভারতীয় মৎস্যজীবী বোঝাই একটি ট্রলারকে মাঝসমুদ্রে সজোরে ধাক্কা মেরে ডুবিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশের নৌবাহিনীর একটি জাহাজ। এই ঘটনা কি নিছকই দুর্ঘটনা, নাকি এর পিছনে লুকিয়ে রয়েছে পাকিস্তান ও চিনের কোনো বৃহত্তর ষড়যন্ত্র?
পশ্চিমবঙ্গের ১৬ জন মৎস্যজীবী যখন ‘এফবি পারমিতা’ ট্রলারে জাল ফেলছিলেন, তখন কোনো আলো না জ্বালিয়ে নিঃশব্দে ধেয়ে আসে বাংলাদেশি জাহাজটি। সজোরে ধাক্কায় ট্রলারটি উল্টে গেলে মৎস্যজীবীরা মাঝসমুদ্রে পড়ে যান। ভারতীয় কোস্টগার্ড ১১ জনকে উদ্ধার করতে পারলেও বাকিরা এখনও নিখোঁজ। উদ্ধার হওয়া মৎস্যজীবীদের দাবি আরও ভয়াবহ—তাঁদের অভিযোগ, নিখোঁজ সতীর্থদের মধ্যে রাজদুল আলি শেখ নামে একজনকে ‘বর্শা’ জাতীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর থেকেই মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার ইসলামাবাদের সঙ্গে সখ্যতা বাড়াতে মরিয়া। ১৯৭১-এর পর এই প্রথম পাকিস্তানি নৌবাহিনী প্রধানের ঢাকা সফরকে কাকতালীয় বলে মানতে নারাজ কূটনৈতিক মহল। গোয়েন্দাদের দাবি, বঙ্গোপসাগরে ভারতের ‘এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোন’-এ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ আচমকা কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছে। গত দু’মাসেই অন্তত ১৭০ জন বাংলাদেশি মৎস্যজীবীকে আটক করেছে ভারতীয় কোস্টগার্ড।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি একটি সুপরিকল্পিত উস্কানি। বারবার ভারতীয় জলসীমা লঙ্ঘন করে ভারতকে কোনো চরম পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করাই মূল লক্ষ্য। এরপর সেই ঘটনাকে বিশ্বমঞ্চে ‘ভারতের অত্যাচার’ হিসেবে তুলে ধরে আন্তর্জাতিক চাপ তৈরির নীল নকশা তৈরি হয়েছে ঢাকা, ইসলামাবাদ ও বেজিং অক্ষে।
সব মিলিয়ে, ডাঙার পর এবার জলেও ভারতের চিন্তা বাড়াচ্ছে প্রতিবেশী দেশ। দক্ষিণ এশিয়ার জলসীমায় ভারতকে কোণঠাসা করার এই খেলায় আগামী দিনে পরিস্থিতি কোন দিকে যায়, এখন সেটাই বড় প্রশ্ন।