বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে এক চূড়ান্ত অমানবিক এবং শিউরে ওঠা ঘটনার সাক্ষী থাকল ১৪ নম্বর জাতীয় সড়ক। সামান্য বচসার জেরে এক চারচাকা গাড়ির চালককে লরির জানলা দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় প্রায় ৩ কিলোমিটার রাস্তা হিঁচড়ে নিয়ে গেল এক মত্ত লরি চালক। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মড়ার ১ নম্বর ক্যাম্প এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
ঘটনার সূত্রপাত: পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট থেকে জনা সাতেক পর্যটক একটি চারচাকা গাড়িতে করে দিঘা যাচ্ছিলেন। বিষ্ণুপুর থানার মড়ার ১ নম্বর ক্যাম্পের সামনে রাস্তার ধারে গাড়ি দাঁড় করিয়ে যখন পর্যটকরা খাবার খাচ্ছিলেন, তখনই পিছন থেকে আসা একটি লোহার রড বোঝাই লরি পর্যটকদের গাড়িতে ধাক্কা মারে।
৩ কিমি যমের সাথে লড়াই: ধাক্কা মারার প্রতিবাদ করতে গেলে লরি চালকের সাথে পর্যটন গাড়ির চালক দুর্যয় শিকদারের বচসা বাঁধে। অভিযোগ, বচসা চলাকালীন লরি চালক হঠাৎই দুর্যয়বাবুর জামার কলার শক্ত করে ধরে ফেলেন এবং লরির গতি বাড়িয়ে দেন। ওই অবস্থাতেই ঝুলন্ত অবস্থায় প্রায় ৩ কিলোমিটার রাস্তা তাঁকে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
জনরোষ ও পুলিশের হস্তক্ষেপ: এই ভয়াবহ দৃশ্য দেখে স্থানীয় বাসিন্দা, উত্তেজিত জনতা এবং ‘পথ বন্ধু’-র কর্মীরা বাইক নিয়ে ধাওয়া শুরু করেন। শেষ পর্যন্ত মড়ার চাতাল মোড়ে লরিটিকে আটকে ফেলেন তাঁরা।
গণধোলাই: লরি থেকে নামিয়ে চালককে বেধড়ক মারধর করে উত্তেজিত জনতা।
ভাঙচুর: ঘাতক লরিটিতে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়।
পুলিশের সাথে ধস্তাধস্তি: খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে উত্তেজিত জনতাকে সামলাতে হিমশিম খেতে হয়। পুলিশের সাথেও সামান্য হাতাহাতি হয় জনতার।
বর্তমান পরিস্থিতি: পুলিশ আহত লরি চালক এবং রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার হওয়া পর্যটন গাড়ির চালক দুর্যয় শিকদারকে বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করেছে। ঘাতক লরিটিকে আটক করা হয়েছে এবং ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বিষ্ণুপুর থানার পুলিশ।