“উস্কানি দিতেই কি এই মসজিদ?”—আইনজীবীর প্রশ্ন উড়িয়ে দিয়ে বড় পর্যবেক্ষণ আদালতের, খুশি হুমায়ুন শিবির

মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় বাবরি মসজিদের অনুকরণে প্রস্তাবিত মসজিদ নির্মাণ নিয়ে আইনি লড়াইয়ে ফের জয়ী হলেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। এই মসজিদ নির্মাণ বন্ধের দাবিতে দায়ের করা জনস্বার্থ মামলাটি বৃহস্পতিবার সরাসরি খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। এর ফলে মসজিদ নির্মাণের পথে আর কোনো আইনি বাধা রইল না বলেই মনে করা হচ্ছে।

কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুজয় পাল ও বিচারপতি পার্থসারথী সেনের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি ছিল। আবেদনকারীর দাবি ছিল, এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে এই নির্মাণ বন্ধ করা হোক এবং নিরাপত্তা বাড়ানো হোক। কিন্তু আদালত এই আবেদনকে ‘ত্রুটিপূর্ণ’ বলে উল্লেখ করেছে।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি স্পষ্ট জানান:

যেখানে মসজিদটি তৈরি হচ্ছে, সেটি কোনো সরকারি জমি নয়, বরং একটি ব্যক্তিগত ট্রাস্টের জমি।

ব্যক্তিগত বা ট্রাস্টের জমিতে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নির্মাণের ক্ষেত্রে আদালতের হস্তক্ষেপে সীমাবদ্ধতা রয়েছে।

আবেদনকারীর যুক্তিগুলি আইনিভাবে ধোপে টেকেনি।

শুনানি চলাকালীন আবেদনকারীর আইনজীবী প্রশ্ন তোলেন, “একটি নির্দিষ্ট ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান তৈরি করে কি মানুষকে ক্রমাগত উস্কানি দেওয়ার চেষ্টা চলছে?” তিনি আরও দাবি করেন, কোনো ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান গড়তে গেলে রাজ্যের অনুমতি প্রয়োজন। তবে আদালত এই তর্কে সায় দেয়নি। এর আগেও শিলান্যাসের দিন স্থগিতাদেশ চেয়ে মামলা হয়েছিল, তখনও আদালত কোনো হস্তক্ষেপ করেনি।

ইতিমধ্যেই বেলডাঙায় এই মসজিদের শিলান্যাস সম্পন্ন হয়েছে। বিধায়ক হুমায়ুন কবীর দাবি করেছেন, সাধারণ মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা অনুদান হিসেবে জমা পড়েছে। আদালতের এই রায়ের পর হুমায়ুন অনুগামীরা উচ্ছ্বসিত। তাঁদের মতে, এটি শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নয়, বরং তাঁদের আবেগ ও অধিকারের জয়।

শিলান্যাস পর্ব মিটে যাওয়ার পর আদালতের এই ‘ক্লিন চিট’ মুর্শিদাবাদের রাজনৈতিক সমীকরণকেও বেশ কিছুটা প্রভাবিত করবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy