এশিয়া কাপে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের কাছে হারের হ্যাটট্রিক কোনোভাবেই মানতে পারছেন না পাকিস্তানের প্রাক্তন ক্রিকেটাররা। ব্যতিক্রম নন ‘রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস’ শোয়েব আখতারও। তাঁর মতে, মহসিন নকভির পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (PCB) ‘ভদ্র ছেলেদের’ খেলিয়ে নিজেদের এবং দেশকে ডোবাচ্ছে।
এশিয়া কাপ ফাইনালের পরই আখতার বোর্ডের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন এবং দলের মানসিকতা বদলের দাবি জানান।
‘লাল্লু-ভুল্লু ভদ্র ছেলে খুঁজছে বোর্ড’
আখতার তাঁর পুরনো দাবির ওপর জোর দিয়ে বলেন, ভারত-কে হারাতে হলে চুপচাপ সব মেনে নেওয়া ক্রিকেটারদের দিয়ে কাজ হবে না।
“আমাদের বোর্ড এখন লাল্লু–ভুল্লু ভদ্র ছেলে খুঁজছে। যারা চুপ করে থাকবে। সব মেনে নেবে। রাত ৮টা বাজলে ঘুমিয়ে পড়বে। এই সব ভদ্র ছেলেদের খেলিয়ে ভারতকে হারানো যাবে না। এমন ক্রিকেটার দরকার যারা মানসিকভাবে শক্তিশালী। ভারতের বিরুদ্ধে লড়তে জানে। শুধু কথা না বলে কাজে করে দেখায়।”
অধিনায়ক ও কোচের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন
এশিয়া কাপে দলের পারফরম্যান্সে একেবারেই খুশি নন শোয়েব আখতার। দলের অধিনায়ক ও কোচিং স্টাফের যোগ্যতা নিয়েও তিনি গুরুতর প্রশ্ন তুলেছেন।
তিনি সরাসরি বলে দিয়েছেন, “অধিনায়কই যখন খেলার যোগ্য নয়, তখন বাকিদের আর বলে কী হবে। এমন এক জনকে কোচ করা হয়েছে যিনি কারও কথা শুনতে চান না।” আখতারের অভিযোগ, তিনি বারবার একজন অতিরিক্ত পেসার ও ব্যাটার খেলাতে বললেও কোচ তা শোনেননি এবং কেবল অলরাউন্ডার খুঁজেছেন। কঠিন পরিস্থিতিতে সেই খেলোয়াড়রাই খেই হারিয়ে ফেলেছেন।
দেশের ক্রিকেটের উন্নতিতে ৭টি পরামর্শ
আখতার জানান, দেশের ক্রিকেটের উন্নতির জন্য তিনি বোর্ডের চেয়ারম্যান মহসিন নকভিকে আগেই সাতটি পরামর্শ দিয়েছিলেন, কিন্তু বোর্ড তা কর্ণপাত করেনি। তাঁর প্রধান পরামর্শগুলির মধ্যে রয়েছে:
পাকিস্তান সুপার লিগ ২.০: বর্তমান লিগ পদ্ধতি বদলে ৮টি অঞ্চলে ভাগ করে ৭-৮টি নতুন দল তৈরি করতে হবে।
ক্রিকেটার তৈরি: ১৫ হাজার ক্রিকেটার তৈরি রাখতে হবে।
অর্থ বিনিয়োগ: ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রচুর টাকা ঢালতে হবে, না হলে ছোটদের ক্রিকেট থেকে প্রতিভাবান ক্রিকেটার উঠে আসবে না।
কঠোর মানদণ্ড: ঘরোয়া ক্রিকেটে ৪ হাজার রান না করলে বা প্রতি সেশনে ২০০০ বল না করলে দেশের হয়ে খেলার সুযোগ দেওয়া যাবে না।
প্রাক্তন পাক পেসার আশা করছেন, এবার হয়তো নকভি তাঁর পরামর্শ শুনবেন।
বোর্ডে কেন ঢুকতে চান না শোয়েব?
আখতার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি নিজে প্রশাসনে ঢুকতে চান না। তাঁর আশঙ্কা, বোর্ডে ঢুকলে সম্মান খোয়াতে হবে। তিনি বলেন, “যারাই বোর্ডে কাজ করেছে তারাই সম্মান হারিয়েছে। আমি সেটা চাই না।… বোর্ড তো কঠোর মানসিকতার কাউকে চায় না। তা হলে কেন যাব?”