বঙ্গোপসাগরে যুদ্ধের মেঘ? ভারতীয় ট্রলারে বাংলাদেশের নৌবাহিনীর জাহাজ ‘ধাক্কা’, নিখোঁজ ৫ মৎস্যজীবী!

শুধু ডাঙায় নয়, এবার জলপথেও কি ভারতের ওপর হামলার ছক কষছে বাংলাদেশ? গত কয়েকদিন ধরে বঙ্গোপসাগরের নীল জলরাশি এখন উত্তপ্ত। ভারতের এক্সক্লুসিভ ইকনমিক জোন (EEZ)-এ বাংলাদেশি মৎস্যজীবীদের লাগাতার অনুপ্রবেশ এবং বাংলাদেশের নৌবাহিনীর সাম্প্রতিক একটি পদক্ষেপ ঘিরে আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

গভীর রাতে মাঝসমুদ্রে নৃশংসতা!

গত ১৫ ডিসেম্বর গভীর রাতে বঙ্গোপসাগরে পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের কাছে আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক সীমান্তে ঘটে এক হাড়হিম করা ঘটনা। অভিযোগ, বাংলাদেশের নৌবাহিনীর একটি টহলদারি জাহাজ সরাসরি ধাক্কা মারে ভারতীয় ট্রলার ‘এফবি পারমিতা’-কে। ১৬ জন মৎস্যজীবী নিয়ে মুহূর্তে উল্টে যায় ট্রলারটি। আর্তনাদ করতে থাকা মৎস্যজীবীদের অন্ধকার সমুদ্রে মৃত্যুর মুখে ফেলে রেখেই বাংলাদেশের জাহাজটি চম্পট দেয় বলে অভিযোগ উঠেছে।

পরদিন সকালে ভারতীয় কোস্ট গার্ড ১১ জনকে উদ্ধার করলেও এখনও ৫ জন মৎস্যজীবী নিখোঁজ। উদ্ধার হওয়া মৎস্যজীবীদের বয়ান আরও ভয়াবহ। তাঁদের দাবি, এটি কোনো দুর্ঘটনা ছিল না, বরং তাঁদের মেরে ফেলারই চেষ্টা হয়েছিল। এই ঘটনায় রাজদুল আলি শেখ নামে এক মৎস্যজীবীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।

তদন্তে পুলিশ, অস্বীকার ঢাকার

সুন্দরবন মেরিন ফিশারম্যান ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। ভারতীয় কোস্ট গার্ড খতিয়ে দেখছে ট্রলারটি ঠিক কোথায় অবস্থান করছিল। অন্যদিকে, এই অভিযোগকে স্রেফ ‘ভ্রান্তিকর’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে ঢাকা। বাংলাদেশের দাবি, তাদের জাহাজ ঘটনাস্থল থেকে ১২ নটিক্যাল মাইল দূরে ছিল।

অনুপ্রবেশের ‘অস্বাভাবিক প্যাটার্ন’

গোয়েন্দা সংস্থাগুলি লক্ষ্য করছে, গত দু’মাসে বঙ্গোপসাগরে অনুপ্রবেশের একটি সুপরিকল্পিত ছক কাজ করছে।

  • ১৬ ডিসেম্বরই দু’টি বাংলাদেশি নৌকা আটক করেছে ভারত।

  • গত কয়েক মাসে অন্তত ৮টি নৌকা এবং ১৭০ জন বাংলাদেশি মৎস্যজীবীকে আটক করেছে ভারতীয় কোস্ট গার্ড।

নেপথ্যে কি পাকিস্তান-চিন যোগ?

বিশেষজ্ঞদের মতে, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে ভারত-বিরোধী সুর কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে। পাক নৌপ্রধানের ঢাকা সফর এবং পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক মাখামাখি নয়াদিল্লির কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, স্থলসীমান্তের পাশাপাশি জলপথেও ভারতকে উসকানি দিয়ে কোনো বড়সড় ‘ফাঁদে’ ফেলার চেষ্টা করছে কট্টরপন্থী শক্তিগুলো।

বঙ্গোপসাগরের এই ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ভবিষ্যতে কী প্রভাব ফেলে, এখন সেটাই দেখার।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy