“এমন কিছু ঘটবে যা পুরো বাংলাদেশকে কাঁপিয়ে দেবে!”—হাদিকে গুলি করার ঠিক আগের রাতে নিজের বান্ধবীকে এই বার্তাই দিয়েছিল পেশাদার শ্যুটার ফয়সাল করিম। সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কট্টরপন্থী ছাত্রনেতা শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর আসতেই বৃহস্পতিবার রাত থেকে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর আর লাশের মিছিলে ওপার বাংলায় এখন ত্রাহি ত্রাহি রব।
বান্ধবীর কাছেই ফাঁস হয়েছিল ছক!
তদন্তকারী সংস্থাগুলির দাবি, হাদিকে খুনের পরিকল্পনা ছিল অত্যন্ত সুপরিকল্পিত। শ্যুটার ফয়সাল করিম খুনের আগের রাতে ঢাকার সাভারের একটি রিসর্টে তাঁর বান্ধবী মারিয়া আখতার লিমার সঙ্গে সময় কাটিয়েছিলেন। সেখানেই তিনি দাবি করেন, পরদিন এমন এক কাণ্ড ঘটবে যা গোটা দেশে তোলপাড় ফেলবে। এমনকি হাদির একটি ভিডিও ক্লিপও বান্ধবীকে দেখিয়েছিলেন তিনি। পরদিন ঠিক পরিকল্পনা মাফিক দিনেদুপুরে মুখোশ পরে হাদিকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়।
জ্বলছে বাংলাদেশ: আক্রান্ত সংবাদমাধ্যম ও সংস্কৃতি
হাদির মৃত্যুর খবর পৌঁছানো মাত্রই ঢাকা শহরজুড়ে শুরু হয় তাণ্ডব। বাদ যায়নি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক বাসভবনও, সেখানেও লাগিয়ে দেওয়া হয় আগুন। একাধিক সংবাদপত্রের দফতর ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে উত্তেজিত জনতা। সবথেকে মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে—এক হিন্দু যুবককে পিটিয়ে মেরে দেহ পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ সামনে এসেছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, ২০২৬-এর নির্বাচনের আগে দেশটিকে পুরোপুরি অশান্তির দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।
২০ জনের মাস্টারপ্ল্যান: অস্ত্র উদ্ধার
তদন্তে উঠে এসেছে, এই খুনের নেপথ্যে অন্তত ২০ জন জড়িত ছিল। র্যাব ও পুলিশের যৌথ অভিযানে ইতিমধ্যেই ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। উদ্ধার হয়েছে বিদেশি পিস্তল, প্রচুর গুলি এবং নগদ অর্থ। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, হামলার পর অভিযুক্তরা মোটরসাইকেলের ভুয়া নম্বর প্লেট লাগিয়ে গা ঢাকা দেয়। এমনকি খুনিকে পালাতে তাঁর বাবাও সাহায্য করেছেন বলে জানা গেছে।
খুনিরা কি ভারতে?
বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমের একটি বড় অংশ দাবি করছে, মূল শ্যুটাররা সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢুকে পড়েছে। যদিও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ জানিয়েছে, এমন কোনো অকাট্য প্রমাণ এখনো মেলেনি। তাসত্ত্বেও ইউনূস প্রশাসন ভারতকে অনুরোধ করেছে, হামলাকারীরা ভারতে থাকলে তাদের যেন দ্রুত গ্রেফতার করে বাংলাদেশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।