দীর্ঘমেয়াদি রোগগুলোর মধ্যে অন্যতম হল ডায়াবেটিস। সাধারণত পুরুষদের মধ্যেই ডায়াবেটিস বেশি হতে দেখা যায়, তবে এখন নারীরাও এই সমস্যা থেকে বাদ পড়ছে না। তাই স্বাস্থ্য জটিলতা এড়াতে নারীদের রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন। আর এর প্রাথমিক উপায় হল সুষম খাদ্য গ্রহণ এবং শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকা।
তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক, ডায়াবেটিস আক্রান্ত নারীরা দৈনন্দিন ডায়েটে কোন কোন খাদ্য অন্তর্ভুক্ত করবেন।
> স্যালমন, ম্যাকারেল, সার্ডিন, টুনার মতো মাছগুলো ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এর উৎস। এই ফ্যাটি ফিসগুলো ইনসুলিন এবং লিপিডের মাত্রা উন্নত করার পাশাপাশি হরমোনের কার্যকারিতা পুনরুদ্ধার করতে পারে। নিয়মিত এই মাছগুলো খেলে হৃদরোগ এবং স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়। তাছাড়া এই মাছগুলি ওজন নিয়ন্ত্রণেও অত্যন্ত সহায়ক।
> নারীদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে আদা দুর্দান্ত কার্যকর। আদাতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যা রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি ইনসুলিন সেনসিটিভিটি উন্নত করে। তাছাড়া আদা হার্ট, থাইরয়েড এবং পাচনতন্ত্রের জন্যও অত্যন্ত উপকারি।
> বহুগুণ সম্পন্ন হলুদ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত সহায়ক। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি সমৃদ্ধ হলুদ রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং বেশ কিছু রোগ বিকাশের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে। তাছাড়া হলুদে থাকা কারকিউমিন যৌগটি অগ্ন্যাশয়ের কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি শরীরে ইনসুলিনের ভারসাম্য বজায় রাখতে পারে।
> পালং শাকের মতো শাকসবজিতে পুষ্টি, ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা বিভিন্ন দীর্ঘস্থায়ী রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। কম ক্যালরিযুক্ত সবুজ শাকসবজিগুলোতে ফাইবার থাকে, যা রক্তের শর্করার মাত্রা বাড়ায় না। তাছাড়া সবুজ শাকসবজিতে উপস্থিত ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, শরীরের প্রদাহ কমায়।
> ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অন্যতম সেরা ফল হল জাম। জাম ইনসুলিন সেনসিটিভিটি উন্নত করতে দুর্দান্ত কার্যকর। জাম হজমের সমস্যা দূর করে এবং জামের বীজের গুঁড়ো রক্তের উচ্চ শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
> ব্লাড সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে রাখতে আখরোট দারুণ কার্যকর। আখরোটে থাকা ফ্যাটি অ্যাসিড ভালো কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়িয়ে এবং ক্ষতিকারক কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে হার্টকে রক্ষা করে। গবেষকদের মতে, প্রতিদিন আখরোট খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রিত থাকে এবং স্থূলতার ঝুঁকিও কমে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং সুস্থ থাকার জন্য দিনে দু’টি আখরোটই যথেষ্ট।