দুধের মতো পুষ্টিকর খাদ্য খুব কমই আছে। কিন্তু আজকাল অনেকেই ভেগান ডায়েট অনুসরণ করছেন বা ল্যাকটোজ ইনটলারেন্সের কারণে গরুর দুধ এড়িয়ে যাচ্ছেন। তাই অনেকেই রাইস মিল্ক, সয়া মিল্ক বা বাদাম দুধের মতো বিকল্প বেছে নিচ্ছেন। তবে বাজারচলতি দুগ্ধজাত পণ্যের বেশিরভাগই ততটা স্বাস্থ্যকর নয়, বলছেন পুষ্টিবিদ অঞ্জলি মুখোপাধ্যায়।
কেন বাজারের বাদাম দুধ এড়িয়ে চলবেন?
অঞ্জলি মুখোপাধ্যায়ের মতে, বাজারে পাওয়া বেশিরভাগ বাদাম দুধে বাদামের পরিমাণ মাত্র ২-৩% থাকে। বাকি অংশে মেশানো হয় কৃত্রিম উপাদান, সংরক্ষণকারী রাসায়নিক ও অতিরিক্ত চিনি। এছাড়া, টেট্রাপ্যাকে দীর্ঘদিন সংরক্ষণের ফলে প্যাকেটের অ্যালুমিনিয়াম দুধের সঙ্গে মিশে গিয়ে বিষক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে, যা হজমের সমস্যা এমনকি ফুড পয়জনিংয়ের কারণ হতে পারে।
আরও বড় সমস্যা হলো, বাজারের বাদাম দুধ বেশ ব্যয়বহুল। ১ লিটার বাদাম দুধের দাম প্রায় ২৭৫-৩০০ টাকা! অথচ ঘরেই সহজ উপায়ে স্বাস্থ্যকর ও সাশ্রয়ী বাদাম দুধ বানানো সম্ভব।
কীভাবে ঘরেই বানাবেন বাদাম দুধ?
✅ উপকরণ:
১ কাপ বাদাম
২-৩ কাপ জল (ভিজানোর জন্য)
৩-৪ কাপ জল (ব্লেন্ড করার জন্য)
স্বাদ বাড়াতে মধু বা খেজুর (ঐচ্ছিক)
কয়েক ফোঁটা ভ্যানিলা এক্সট্র্যাক্ট (ঐচ্ছিক)
✅ প্রস্তুত প্রণালী:
1️⃣ এক বাটিতে বাদাম নিয়ে তাতে ২-৩ কাপ জল দিন এবং ৮-১২ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন (সারা রাত ভিজিয়ে রাখলে সবচেয়ে ভালো)।
2️⃣ বাদাম নরম হয়ে গেলে ভালোভাবে ধুয়ে জল ঝরিয়ে ফেলুন।
3️⃣ এবার ব্লেন্ডারে বাদামের সঙ্গে ৩-৪ কাপ জল দিয়ে ২-৩ মিনিট ব্লেন্ড করুন, যতক্ষণ না মিশ্রণ মসৃণ হয়ে যায়।
4️⃣ স্বাদের জন্য মধু, খেজুর বা ভ্যানিলা এক্সট্র্যাক্ট যোগ করতে পারেন।
5️⃣ একটি পাতলা কাপড় বা ছাঁকনি ব্যবহার করে মিশ্রণটি ছেঁকে নিন।
6️⃣ বাদামের খোসা ফেলে দিয়ে তৈরি দুধ কাচের বোতলে ভরে ফ্রিজে রেখে দিন। এটি ৩-৪ দিন পর্যন্ত ভালো থাকবে।
কেন ঘরে বানানো বাদাম দুধ ভালো?
✅ বাজারের দুধের মতো কোনও কৃত্রিম সংযোজন থাকে না।
✅ ক্যালসিয়াম, প্রোটিন ও স্বাস্থ্যকর ফ্যাট সমৃদ্ধ।
✅ হজমের জন্য সহজ ও পেটের জন্য উপকারী।
✅ ব্যয়বহুল বাজারের বাদাম দুধের তুলনায় অনেক বেশি সাশ্রয়ী।
তাই সুস্থ থাকতে আজই বানিয়ে ফেলুন ঘরোয়া বাদাম দুধ!