ফ্যাটি লিভারের চিন্তা নেই! রোজ সকালে পান করুন এই পানীয় তাহলেই পাবেন মুক্তি

অনিয়মিত জীবনযাপন এবং অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কারণে আজকাল অনেকেই ফ্যাটি লিভারের সমস্যায় ভুগছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, আমাদের লিভারে এমনিতেই স্বাস্থ্যকর চর্বির একটি স্তর থাকে, তবে যখন এর উপর অতিরিক্ত চর্বি জমতে শুরু করে, তখন সেটি ফ্যাটি লিভার হিসেবে গণ্য হয়।

অতিরিক্ত চর্বি জমা হলে লিভারের স্বাভাবিক কার্যকারিতা ব্যাহত হয়, যার ফলে সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উপর এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। তবে বিশেষজ্ঞরা আশার আলো দেখিয়েছেন। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং একটি স্বাস্থ্যকর জীবনধারা বজায় রাখার মাধ্যমে নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভারের সমস্যা খুব সহজেই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।

নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজের (NAFLD) কারণে লিভারে প্রদাহ ও চর্বি জমে, যা দীর্ঘমেয়াদীভাবে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস এবং এমনকি লিভার সিরোসিসের ঝুঁকিও বাড়াতে পারে। তবে গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, প্রাথমিক পর্যায়ে এই রোগ শনাক্ত করা গেলে কিছু ঘরোয়া উপাদানের মাধ্যমেই তা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।

গবেষণা অনুযায়ী, প্রতিদিনের খাবারে হলুদ অন্তর্ভুক্ত করলেই নাকি লিভারে জমা অতিরিক্ত চর্বি দূর করা সম্ভব। মেডিকেল নিউজ টুডে-তে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এবং বেশ কয়েকটি গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, হলুদের কারকিউমিন নামক একটি যৌগ প্রদাহ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

জার্নালটি ২০২১ সালের এনএএফএলডিতে আক্রান্ত ৬৪ জনের উপর চালানো একটি গবেষণার উদাহরণ দিয়েছে এবং জানিয়েছে, কীভাবে ২ গ্রাম হলুদ গ্রহণ লিভারের এনজাইম, সিরাম ও ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।

এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত ব্যক্তিরা সকালের চায়ের মতো করে হলুদ মেশানো জল পান করার মাধ্যমেই লিভারের চর্বি কমাতে পারবেন। এই পানীয় চর্বি কমাতে এবং লিভারের কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করে।

এই পানীয় তৈরি করতে এক গ্লাস গরম জল নিন, তাতে এক চিমটি হলুদ গুঁড়ো ও ১ চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে খালি পেটে পান করুন। এর প্রভাব আরও বাড়াতে এক চিমটি দারুচিনি গুঁড়াও মেশাতে পারেন।

এছাড়াও বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছেন, যারা ফ্যাটি লিভারে ভুগছেন তাদের উচিত নিয়মিত তাজা ফল ও শাকসবজি খাওয়া। এছাড়া উচ্চ আঁশযুক্ত উদ্ভিদ যেমন – লেবু ও গোটা শস্য খাদ্যতালিকায় যোগ করা উচিত। পাশাপাশি অতিরিক্ত চিনি, লবণ, পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট ও স্যাচুরেটেড ফ্যাট আছে এমন খাবার একেবারে এড়িয়ে চলা উচিত। আর যারা অ্যালকোহলে আসক্ত, তাদের অবশ্যই এটি পরিহার করতে হবে।

অন্যান্য প্রতিকার:

আরও একটি গবেষণা অনুসারে, কফি লিভারের জন্য বেশ কিছু সুরক্ষামূলক সুবিধা প্রদান করে। এটি প্রমাণিত হয়েছে যে, কফি লিভারের এনজাইম তৈরিতে সাহায্য করে, যা প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করে। এছাড়াও, এনএএফএলডি আক্রান্ত ব্যক্তিদের লিভারের সামগ্রিক ক্ষতি কমাতে নিয়মিত কফি খাওয়া উচিত। বিশেষজ্ঞদের মতে, কালো কফি হলো সর্বোত্তম বিকল্প, কারণ এতে কোনো অতিরিক্ত চর্বি বা চিনি থাকে না।

সুতরাং, ফ্যাটি লিভারের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে আনতে সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং ঘরোয়া প্রতিকার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। নিয়মিত হলুদ মেশানো জল পান করার পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর জীবনধারা মেনে চললে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy