প্রেম, এ এক অদ্ভুত অনুভূতি! খুব কম মানুষই আছেন যাদের জীবনে ভালোবাসার ছোঁয়া লাগেনি। মজার ব্যাপার হলো, যখন কেউ প্রেমে পড়েন, তখন তার শরীরে ও মনে কিছু পরিবর্তন আসে, যা অনেক সময় নিজেরও অগোচরে ঘটে যায়। চলুন, সেই শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনগুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক –

১. কমে যায় শরীরের নানান ব্যথা:

ভালোবাসা মস্তিষ্কের নিউরাল রিসেপ্টরের কার্যকারিতা বাড়িয়ে ব্যথার অনুভূতি কমিয়ে দিতে পারে। বিজ্ঞানীরা ভালোবাসাকে ব্যথানাশক ওষুধের সঙ্গে তুলনা করেছেন। প্রেমে পড়লে অনেক মানুষের শরীরের বিভিন্ন ধরনের ব্যথা সেরে যেতে দেখা যায়।

২. বেড়ে যায় ভুলোমনা ভাব:

প্রেমে পড়লে মস্তিষ্কে প্রচুর পরিমাণে অক্সিটসিন হরমোন উৎপন্ন হয়। এই হরমোন স্মৃতিশক্তি কিছুটা কমিয়ে দিতে পারে। আর তাই, প্রেমে পড়া ব্যক্তিরা কিছুটা অন্যমনস্ক এবং ভুলোমনা হয়ে পড়েন। অনেক সময় সাধারণ জিনিসও তারা ভুলে যান।

৩. খাবারের স্বাদ হয় বেশি:

যারা নতুন প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছেন, তাদের কাছে খাবারের স্বাদ অন্যদের তুলনায় একটু বেশিই মনে হতে পারে। প্রেমে পড়লে খাবারের স্বাদ যেন আরও বেড়ে যায়। এর কারণ মস্তিষ্কের রাসায়নিক পরিবর্তন।

৪. মস্তিষ্কের কার্যকলাপে আসে পরিবর্তন:

গবেষণা বলছে, প্রেমে পড়ার অনুভূতিটি মস্তিষ্কের ১২টি ভিন্ন স্থানে গিয়ে আঘাত করে। এর ফলে প্রেমে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কার্যকলাপ পরিবর্তিত হয়ে যায়। মস্তিষ্ক সবসময় যেভাবে চিন্তা করত, তখন সেভাবে চিন্তা করতে পারে না। অনেক বিষয়ই আবেগ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হতে শুরু করে।

৫. পাল্টে যায় হৃৎপিণ্ডের গতি:

প্রেমে পড়লে শরীরে বিভিন্ন হরমোনের পরিবর্তন ঘটে। আর এই হরমোনের পরিবর্তনের প্রভাবে রক্তচাপ কিছুটা কমে যায়। সেইসঙ্গে কমে যায় হৃৎপিণ্ডের স্বাভাবিক গতিও। বিশেষ করে ভালোবাসার মানুষটির আশেপাশে থাকলে এই পরিবর্তন বিশেষভাবে লক্ষ্য করা যায়।

৬. কমে যায় ঘুমের পরিমাণ:

প্রেমে পড়লে রাতের ঘুমের পরিমাণ অন্তত এক ঘণ্টা কমে যেতে পারে। এর প্রধান কারণ হলো, রাতে ঘুমাতে গেলেই প্রিয় মানুষটির কথা সবচাইতে বেশি মনে পড়তে থাকে। এর পাশাপাশি শারীরিক ও মানসিক অস্থিরতাও বেড়ে যায়। ফলে শরীর সহজে ঘুমানোর জন্য প্রস্তুত হতে পারে না এবং ঘুম আসতে দেরি হয়।

সুতরাং, যদি আপনার জীবনেও প্রেমের আগমন ঘটে থাকে, তাহলে এই পরিবর্তনগুলো হয়তো আপনি নিজের অজান্তেই অনুভব করছেন। ভালোবাসা শুধু একটি সুন্দর অনুভূতিই নয়, এটি আমাদের শরীর ও মনের উপরও গভীর প্রভাব ফেলে।