দিনভর তীব্র গরম আর ধুলোবালিতে ঘোরাঘুরি করার পর ত্বক যেমন ক্লান্ত ও মলিন হয়ে পড়ে, তেমনই চুলেরও প্রয়োজন হয় বিশেষ পরিচর্যার। দূষণের কারণে চুল হয়ে যায় রুক্ষ, হারায় তার স্বাভাবিক ঔজ্জ্বল্য, এমনকি বেড়ে যায় চুল পড়ার সমস্যাও। ব্যস্ত জীবনে বারবার পার্লারে গিয়ে চুলের যত্ন নেওয়াও অনেকের পক্ষে সম্ভব হয় না। তবে চিন্তা নেই! আপনার হাতের কাছে থাকা ভিটামিন ই ক্যাপসুলই হতে পারে চুলের নানা সমস্যার সহজ সমাধান।
চুল পড়া, খুশকি কিংবা পাকা চুলের মতো একাধিক সমস্যার সমাধানে ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করলে সহজেই উপকার পাওয়া যায়। চলুন দেখে নেওয়া যাক, কীভাবে এই ভিটামিন ই ক্যাপসুল চুলের ওপর প্রয়োগ করবেন –
১) ভিটামিন ই ক্যাপসুল ও অ্যালোভেরা জেল: একটি পাত্রে সাত থেকে আটটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল কেটে তার ভেতরের তেল বের করে নিন। সেই তেলের সঙ্গে দুই টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেল ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণটি আপনার চুল এবং মাথার তালুতে লাগান। কিছুক্ষণ আঙুল দিয়ে আলতোভাবে মালিশ করুন। মাস্কটি ৩০-৪০ মিনিটের জন্য রেখে দিন এবং তারপর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি সপ্তাহে দু’বার ব্যবহার করলে চুলের গোড়া মজবুত হবে এবং চুল পড়ার সমস্যাও উল্লেখযোগ্যভাবে কমবে। অ্যালোভেরা চুলের মসৃণতা বাড়াতেও সাহায্য করে।
২) ভিটামিন ই ক্যাপসুল, ডিম এবং বাদাম তেল: একটি ডিম ভেঙে একটি পাত্রে রাখুন। চারটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল থেকে তেল বের করে ডিমের সঙ্গে মেশান। এরপর এক চা চামচ বাদাম তেল নিয়ে মিশ্রণটির সঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। মাথার ত্বক থেকে শুরু করে চুলের আগা পর্যন্ত এই মাস্কটি লাগান। এক ঘণ্টা রেখে দিন। তারপর শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে এক থেকে দু’বার এটি ব্যবহার করতে পারেন। ডিম চুলের প্রোটিনের অভাব পূরণ করে এবং বাদাম তেল চুলকে আরও শক্তিশালী করে তোলে।
৩) ভিটামিন ই ক্যাপসুল, দই এবং মধু: একটি পাত্রে অর্ধেক কাপ টক দই ও দুই চামচ মধু নিন। চারটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল থেকে তেল বের করে দইয়ের মিশ্রণের সঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়ে চুলে লাগান। আধ ঘণ্টা রেখে শ্যাম্পু করে নিন। সপ্তাহে দু’দিন এটি ব্যবহার করলে খুশকির সমস্যা দূর হবে এবং চুলের হারানো জেল্লাও ফিরে পাবেন। দই মাথার ত্বক পরিষ্কার রাখে এবং মধু চুলকে ময়েশ্চারাইজ করে তোলে।
এই সহজ ঘরোয়া পদ্ধতিগুলো অবলম্বন করে আপনি আপনার চুলের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করতে পারেন এবং পার্লারের খরচও বাঁচাতে পারেন। ভিটামিন ই ক্যাপসুলের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এবং উজ্জ্বলতা বাড়াতে বিশেষভাবে সহায়ক। তাই আর দেরি না করে আজ থেকেই এই পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করে দেখুন এবং পান ঝলমলে, স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুল।