ফ্যাটি লিভার, অর্থাৎ লিভারে অতিরিক্ত চর্বি জমা হওয়া, এক নীরব ঘাতক হতে পারে। প্রথম দিকে এর কোনো স্পষ্ট লক্ষণ নাও দেখা যেতে পারে, তবে কিছু দৃশ্যমান লক্ষণ আছে যা এই অবস্থার ইঙ্গিত দিতে পারে। এই লক্ষণগুলো প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেলে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা সহজ হয়। চলুন, জেনে নেওয়া যাক ফ্যাটি লিভারের চারটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ:
১. ঘাড় বা বগলে কালো দাগ
ত্বকে, বিশেষ করে ঘাড়, বগল বা শরীরের অন্যান্য ভাঁজের চারপাশে যদি কালো, মখমলের মতো দাগ দেখা যায়, তবে তা ফ্যাটি লিভারের একটি লক্ষণ হতে পারে। এটি ইনসুলিন রেজিস্টেন্স-এর সঙ্গে সম্পর্কিত। এই অবস্থাকে অ্যাক্যানথোসিস নিগ্রিকানস বলা হয় এবং এটি কোনোভাবেই উপেক্ষা করা উচিত নয়।
২. পেটে ফোলাভাব
যদি আপনার পেট ফুলে যায় এবং তা শক্ত বা অস্বস্তিকর মনে হয়, তবে এটি ফ্যাটি লিভারের একটি গুরুতর লক্ষণ হতে পারে। যদিও এই ফোলাভাবকে তুচ্ছ মনে হতে পারে, তবে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে সন্দেহ দূর করা জরুরি। লিভারের কার্যকারিতা খারাপ হয়ে গেলে পেটের অংশে তরল জমা হয়, যা এই ফোলাভাবের কারণ। এই অবস্থাকে অ্যাসাইটস বলা হয়, যা পেটে দৃশ্যমান শিরাও সৃষ্টি করতে পারে এবং এটি চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তার ইঙ্গিত দেয়। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথ (NIH)-এর তথ্য অনুযায়ী, পেট ফুলে যাওয়া ফ্যাটি লিভারের কারণে সৃষ্ট অনেক জটিলতার মধ্যে অন্যতম।
৩. মুখ বা পায়ে ফোলাভাব
ফ্যাটি লিভার শরীরে তরল ধরে রাখার কারণ হতে পারে, যার ফলে মুখ, পা বা গোড়ালি ফুলে যায়। এই অবস্থাকে এডিমা বলা হয়। লিভার যখন শরীরের তরলের সঠিক ভারসাম্য বজায় রাখতে সক্ষম হয় না, তখনই এটি ঘটে। যদি কোনো স্পষ্ট কারণ ছাড়াই ফোলাভাব অব্যাহত থাকে, তবে দ্রুত এটি পরীক্ষা করানো উচিত।
৪. ত্বকে হালকা চুলকানি
কিছু ক্ষেত্রে ত্বকে চুলকানি, যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে হালকা কিন্তু স্থায়ী, ফ্যাটি লিভার সহ লিভারের সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। লিভারের কর্মহীনতার কারণে রক্তে পিত্ত লবণ জমা হওয়ার ফলে ত্বকে জ্বালা হতে পারে। যদি চুলকানি অনেক বেশি এবং দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে লিভারের কার্যকারিতা পরীক্ষা করা প্রয়োজন হতে পারে।
এই লক্ষণগুলো আপনার শরীরে দেখা গেলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। প্রাথমিক অবস্থায় ফ্যাটি লিভার সনাক্ত করা গেলে সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা এড়ানো সম্ভব।