ঘাড়, কোমর, হাঁটুসহ শরীরের যেকোনো ব্যথায় আমরা দ্রুত ব্যথানাশক ওষুধের দ্বারস্থ হই। কিন্তু আমরা কি কখনো ভেবে দেখেছি, এই ব্যথানাশক ওষুধগুলো আমাদের শরীরের জন্য কতটা ক্ষতিকর? ব্যথানাশক ওষুধের কারণে গ্যাস্ট্রিক আলসার হওয়া বা কিডনির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়াটা এখন প্রায় সবারই জানা। তবে সম্প্রতি আমেরিকান কার্ডিয়াক সোসাইটি এক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছে: সবচেয়ে সহনশীল ব্যথানাশক আইবুপ্রোফেনও হার্ট অ্যাটাকের কারণ হতে পারে।
ব্যথানাশক: ক্ষণিকের আরাম, দীর্ঘস্থায়ী বিপদ
আধুনিক জীবনযাত্রায় ব্যথানাশক ওষুধের ওপর নির্ভরশীলতা বেড়েছে বহুগুণে। কিন্তু সামান্য ব্যথা সারাতে গিয়ে আমরা অজান্তেই আমাদের কিডনি বা হৃদযন্ত্রের মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে ঝুঁকির মুখে ফেলছি। পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতে তাই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন চিকিৎসার দিকে মানুষের আগ্রহ ক্রমশ বাড়ছে।
ব্যথার ওষুধের বিকল্প আছে কি?
হ্যাঁ, অবশ্যই আছে! ব্যথার প্রকৃত কারণ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে নির্ণয় করতে পারলে ব্যথানাশক ওষুধ ছাড়াই বেশিরভাগ শারীরিক ব্যথার চিকিৎসা করা সম্ভব। কিছু সাধারণ শারীরিক পরীক্ষা এবং কিছু প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষার মাধ্যমেই ব্যথার আসল কারণ নির্ণয় করা যায়।
সম্প্রতি এমনই একজন রোগীর কথা জানা গেল, যিনি কোমর ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে তিন মাস ধরে ব্যথানাশক সেবন করছিলেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, ওষুধ খেলে সাময়িক আরাম মিলছে বটে, কিন্তু ওষুধ বন্ধ করলেই ব্যথা আবার ফিরে আসছে। তাঁর চিকিৎসার ইতিহাস থেকে জানা যায়, তিনি দিনে ৯-১০ ঘণ্টা একটানা বসে কাজ করতেন। বিশেষজ্ঞের পরামর্শে তাঁর বসার চেয়ারে পরিবর্তন আনা হয়, সেই সঙ্গে কিছু বিজ্ঞানসম্মত ব্যায়াম এবং ইলেক্ট্রোথেরাপি দেওয়া হয়। আশ্চর্যের বিষয় হলো, এই পদ্ধতিগুলোই তাঁকে ব্যথামুক্ত জীবন উপহার দিয়েছে, কোনো ব্যথানাশক ওষুধ ছাড়াই।
শেষ কথা: কারণ জানুন, সুস্থ থাকুন
শারীরিক ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়ার মূলমন্ত্র হলো ব্যথার প্রকৃত কারণ নির্ণয় করা। ব্যথার লক্ষণ দেখা দিলে নিজে নিজে ওষুধ না খেয়ে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কারণ নির্ণয় করে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন চিকিৎসা পদ্ধতি গ্রহণ করলে আপনি সুস্থ ও ব্যথামুক্ত জীবনযাপন করতে পারবেন। মনে রাখবেন, আপনার শরীর আপনার সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ।