ভেজাল খাবার, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন এবং ধূমপানসহ নানা কারণে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা আজকাল প্রায় প্রতিটি ঘরেই দেখা যায়। এটি এখন এক সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে সঠিক নিয়ম মেনে চললে এই সমস্যা থেকে অনেকটাই পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভুগলে সব ধরনের খাবার খাওয়া যায় না, খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে তাই অবশ্যই সচেতন হতে হবে।
গ্যাস্ট্রিক থেকে বাঁচতে কী করবেন?
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং সুস্থ থাকতে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো মেনে চলুন:
১. নির্দিষ্ট সময়ে খাবার: প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে দুপুর ও রাতের খাবার খাওয়ার অভ্যাস করুন। এতে হজম প্রক্রিয়া সুসংগঠিত থাকে।
২. কম পরিমাণে বারবার খান: একবারে বেশি পরিমাণে না খেয়ে অল্প করে বারবার খাবার গ্রহণ করুন। এতে হজমে চাপ কম পড়ে।
৩. ধূমপান ও মদপান ত্যাগ: ধূমপান ও মদপান গ্যাস্ট্রিকের অন্যতম কারণ। এগুলোকে সম্পূর্ণভাবে এড়িয়ে চলুন।
৪. রাতের খাবার ও ঘুমের সময়: ঘুমানোর কমপক্ষে ২ ঘণ্টা আগে রাতের খাবার খেয়ে নিন। এতে খাবার হজম হওয়ার জন্য যথেষ্ট সময় পায়।
৫. ঔষধের ব্যাপারে সতর্ক: চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া পেট খারাপ বা বমির ওষুধ কিনে খাবেন না। এতে সমস্যা আরও বাড়তে পারে।
৬. খাদ্য নির্বাচন: অতিরিক্ত তেল ও মশলাযুক্ত খাবার পরিহার করুন। বাইরের খাবার না খেয়ে বাড়ির তৈরি তাজা খাবার খান। স্টোর করা বা ফ্রোজেন ফুড যতটা সম্ভব কম খাবেন।
৭. ওজন ও ব্যায়াম: শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমান। নিয়মিত ব্যায়াম করুন, যা হজমশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে।
৮. মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ: মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা অনেক সময় গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বাড়িয়ে দেয়। তাই মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করুন। যোগা, মেডিটেশন বা পছন্দের কাজ করে মনকে শান্ত রাখুন।
৯. সঠিক মেন্যু: তৈলাক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। মাংস, ডিম, বিরিয়ানি, মোগলাই, চাইনিজ খাবার যা-ই খান না কেন, তা দুপুরের মেন্যুতে অন্তর্ভুক্ত করুন। রাতের খাবার যেন হালকা হয়। শাকসবজি, ছোট মাছ এসব দিয়ে রাতের মেন্যু সাজান।
১০. খাবারের পর জল পান: খাওয়ার পরপরই অনেক বেশি জল পান করার প্রবণতা বাদ দিন। ভাত খাওয়ার অন্তত ৩০ মিনিট পর জল পান করুন।
১১. খাওয়ার পর বিশ্রাম: দিনে কিংবা রাতে খাওয়ার পরপরই শুয়ে না পড়ে কিছুক্ষণ আস্তে আস্তে হাঁটাচলা করতে পারেন অথবা সোজা হয়ে বসে থাকতে পারেন। অন্তত ৩০ মিনিট পর ঘুমাতে যান।