গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভোগেননি, এমন কাউকে পাওয়া যাবে কি? আমাদের পাকস্থলীর গায়ে সুক্ষ্ম একটি ঝিল্লি থাকে। খাবারের অ্যাসিড ও ক্ষতিকর জীবাণু থেকে পাকস্থলীকে বাঁচায় এই ঝিল্লি। যদি কোনো কারণে এটি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তবে অ্যাসিডের সংস্পর্শে সেখানে জ্বালাপোড়া শুরু হয়। আর এটিই হলো গ্যাস্ট্রাইটিসের লক্ষণ। এই সমস্যা থেকে বাঁচতে ঠিক রাখতে হবে হজম প্রক্রিয়া। সেজন্য কিছু অভ্যাস বাদ দেওয়া জরুরি-
ধূমপান ও অ্যালকোহল
ধূমপান কিংবা অ্যালকোহল গ্রহণ এমনিতেই বদ অভ্যাসের তালিকায় পড়ে। এটি গ্যাস্ট্রিকেরও বড় কারণ। সিগারেটের ধোঁয়া ও অ্যালকোহল আমাদের ডাইজেস্টিভ মিউকাস নষ্ট করে দেয়। এই কাজ করে অতিরিক্ত চা-কফিও। ঝাল, আদা, সরিষা কিংবা চিনিজাতীয় খাবার বেশি খেলেও একই ক্ষতি হয়। তাই খাবার তালিকা থেকে এদের বাদ দিতে হবে, আনতে হবে নিয়ন্ত্রণ।
খাবারে অনিয়ম
গ্যাস্ট্রিক থেকে বাঁচতে চাইলে খাবারে কোনো ধরনের অনিয়ম করা যাবে না। খেতে হবে নির্দিষ্ট সময়ে, নির্দিষ্ট পরিমাপে। গবেষকদের মতে, সুস্থ থাকার জন্য আমাদের অল্প করে পাঁচ বেলায় খাওয়া উচিত। একবারে বেশি খাবার খেলে হজমে সমস্যা দেখা দিতে পারে। সেইসঙ্গে বাড়বে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা।
অল্প চিবিয়ে খেয়ে ফেলা
অনেকেই আছেন যারা তাড়াহুড়ো করে খাবার খান। দ্রুত খাবার খাওয়া কোনো কাজের কথা নয়। আপনি যদি ভালোভাবে না চিবিয়ে খাবার খেয়ে ফেলেন তবে পাকস্থলীর ওপর চাপ বাড়বে। সেখান থেকে দেখা দেবে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা। তাই খাওয়ার সময় কথা বলা কিংবা অন্য যেকোনো কাজ করা থেকে বিরত থাকুন।
একসঙ্গে অনেক ধরনের খাবার খাওয়া
একসঙ্গে অনেক ধরনের খাবার সাজিয়ে খেতে বসেন? এই অভ্যাস আপনার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার জন্য যথেষ্ট। অনেকে আবার খাবারের সঙ্গে সঙ্গে ফল খান। এটিও বাদ দিতে হবে। মূল খাবার এবং ফল খাওয়ার মধ্যে অন্তত আধা ঘণ্টা বিরতি দেওয়া উচিত। সবচেয়ে ভালো হয় সকাল ও দুপুর কিংবা দুপুর ও রাতের খাবারের মাঝের সময়ে ফল খেলে।
খাবারের পরপরই জল পান করা
জল ছাড়া খাবার খেতেই পারেন না অনেকে। এক লোকমা খাবার তো এক ঢোঁক জল, এমন অভ্যাস থাকলে আজই বাদ দিন। খাবারের সঙ্গে সঙ্গে জল পান করতে থাকলে তা গ্যাস্ট্রিক ডেকে আনে। এর কারণ হলো আমরা খাবার খাওয়ার পরপরই আমাদের পাকস্থলীতে হজম রসের নিঃসরণ ঘটে। পেটে জল যদি বেশি যায় তবে হজম রস তার সঙ্গে মিশে কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলে। এর ফলে দেখা দেয় অ্যাসিডিটি ও বুকে জ্বালাপোড়ার মতো সমস্যা।