করোনাভাইরাস মহামারীর শুরু থেকে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এক বড় পরিবর্তন এসেছে – ডিজিটাল ডিভাইসের ব্যবহার বহুগুণে বেড়েছে। অফিসের কাজ থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত প্রয়োজন, সব মিলিয়ে কম্পিউটারের সামনে একটানা বসে থাকার প্রবণতা এতটাই বেড়েছে যে, শারীরিক শ্রম প্রায় নেই বললেই চলে। আর এর প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়ছে আমাদের শরীরের ওপর, বিশেষ করে পিঠের ওপর। গবেষণায় দেখা গেছে, ৯০ শতাংশ মানুষের পিঠ ব্যথার প্রধান কারণই হলো একটানা বসে থাকা। কিন্তু এই সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়ার উপায় কী? আসুন জেনে নিই কিছু সহজ কৌশল।
কেন একটানা বসে থাকা পিঠ ব্যথার কারণ?
বাসায় বসে কাজের কারণে অনেকেরই শরীরচর্চা কমে গেছে। শারীরিক কার্যকলাপের অভাবে পিঠের পেশী দুর্বল হয়ে পড়ে এবং দীর্ঘক্ষণ একই ভঙ্গিতে বসে থাকার ফলে মেরুদণ্ডের ওপর চাপ পড়ে, যা পিঠ ব্যথার কারণ হয়।
পিঠ ব্যথা থেকে মুক্তির সহজ উপায়:
১. ঘুমের অবস্থান: পিঠ ব্যথার সমস্যায় ভুগলে ঘুমানোর সময় কিছুটা শক্ত বিছানায় শোয়ার চেষ্টা করুন। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, পিঠে ব্যথা থাকলে ঘুমের সময় বালিশ ব্যবহার করবেন না। এটি মেরুদণ্ডকে সোজা রাখতে সাহায্য করবে।
২. নিয়মিত শরীরচর্চা: অল্প হলেও শরীরচর্চায় মনোযোগী হোন। নিয়মিত শবাসন, ভুজঙ্গাসন, মকরাসনের মতো যোগব্যায়াম করলে পিঠের ব্যথা উপশম হবে। এই আসনগুলো পিঠের পেশীগুলোকে শক্তিশালী করে এবং নমনীয়তা বাড়ায়।
৩. সঠিক বসার ভঙ্গি: বাসায় বসে অফিসের কাজ করার সময় চেষ্টা করুন শক্ত কোনো চেয়ারে বসে কাজ করার। বিছানায় হেলান দিয়ে বা আরামদায়ক সোফায় বসে কাজ করলে পিঠের ব্যথা বাড়বেই। সঠিক ভঙ্গি মেনে বসলে মেরুদণ্ডের ওপর চাপ কমে।
৪. কাজের মাঝে বিরতি: কাজের সময় প্রতি ২০ মিনিট পর পর অবশ্যই বিরতি নেওয়ার চেষ্টা করুন। চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ান, কিছুক্ষণ হেঁটে আসুন বা হালকা স্ট্রেচিং করুন। এরপর আবার বসুন। এই ছোট বিরতিগুলো পিঠের ওপর চাপ কমাতে সাহায্য করবে এবং ব্যথা হওয়ার প্রবণতা কমাবে।
৫. উষ্ণ জলের সেঁক: যদি পিঠে ব্যথা হয়েই যায়, তাহলে তা উপশমে কুসুম গরম জল নিয়ে গোসলের সময় অল্প অল্প করে পিঠে ঢালুন। উষ্ণ জলের সেঁক পেশীগুলোকে শিথিল করে এবং ব্যথা থেকে দ্রুত পরিত্রাণ পেতে সাহায্য করে।