অভিনেতা ও সফল উদ্যোক্তা বিবেক ওবেরয় সম্প্রতি নিজের জীবনযাত্রা, ব্যবসা এবং তাঁর মোট সম্পত্তি নিয়ে চলা গুঞ্জন, যা প্রায় ১,২০০ কোটি টাকার কাছাকাছি বলে দাবি করা হয়—সেই বিষয়ে মুখ খুলেছেন।
এক সাক্ষাৎকারে বিবেক স্পষ্ট জানান, মোট সম্পত্তির সঠিক অঙ্ক তাঁর কাছে ততটা গুরুত্বপূর্ণ নয়, কারণ তিনি ইতিমধ্যেই এমন এক আর্থিক অবস্থায় পৌঁছেছেন যেখানে তাঁর পরবর্তী বহু প্রজন্ম নিশ্চিন্তে জীবন কাটাতে পারবে।
বিবেকের দাবি, মাত্র ১৫ বছর বয়সেই তিনি আর্থিকভাবে স্বাধীন হয়ে যান এবং ১৬–১৭ বছর বয়সে শেয়ার বাজারে লেনদেনের মাধ্যমে নগদ অর্থ হিসেবে নয়, বরং এক কোটি টাকা উপার্জন করেন। দেশভাগের সময় তাঁর পরিবার প্রাসাদ-সহ বহু সম্পদ হারাতে হয়েছিল, আর সেই শূন্য থেকে শুরু করার অভিজ্ঞতা থেকেই তিনি ছোটবেলা থেকে উপার্জনের গুরুত্ব বুঝেছিলেন।
কলেজে পড়াকালীনই তিনি শেয়ার বাজার, ব্যবসার হিসেব-নিকেশ এবং বিনিয়োগ সম্পর্কে শেখা শুরু করেন। মাত্র ১৯ বছর বয়সে তিনি নিজের প্রথম ব্যবসা শুরু করেন এবং নিজের ২০–২৫ লাখ টাকার বিনিয়োগের বিপরীতে মোট ১২ কোটি টাকার ফান্ড সংগ্রহ করতে সক্ষম হন। তাঁর সাফল্যের মূল মন্ত্র: তিনি সবসময় বিনিয়োগকারীদের লাভকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন, আর সেই কারণেই তাঁর ব্যবসাগুলো লাভজনক হয়েছে।
বর্তমানে অভিনয় জগতের ব্যস্ততার মাঝেও বিবেক ওবেরয় একাধিক ক্ষেত্রে ব্যবসা পরিচালনা করেন এবং প্রতিদিন প্রায় ১৬ ঘণ্টা কাজ করেন। এমনকি ছুটি বা ফাঁকা সময়ও তিনি ব্যবসাকেই দেন।
দুবাইয়ে থাকার সময় প্রবাসী ভারতীয়দের ভারতে উন্নয়নে বিরাট ভূমিকা উপলব্ধি করেন বিবেক। তাঁর দাবি, প্রবাসী ভারতীয়রা প্রতি বছর ভারতে ১৩৬ বিলিয়ন ডলার পাঠান, যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের প্রায় অর্ধেক। গত এক দশকে তিনি নিজেও বিদেশ থেকে প্রায় ৪০ মিলিয়ন ডলার ভারতের সামাজিক কাজের জন্য তুলে এনেছেন।
নিজের বিপুল নেট ওয়ার্থ নিয়ে প্রশ্নে বিবেক বলেন, “মানুষের যদি নিজের পছন্দের একটা বাড়ি আর একটা গাড়ি থাকে, তাহলেই যথেষ্ট। ঈশ্বর আমাকে এত দিয়েছেন যে আমার ভবিষ্যৎ বহু প্রজন্ম নিশ্চিত থাকতে পারবে।”
অভিনয়ের ক্ষেত্রেও বিবেক সম্প্রতি নজর কেড়েছেন। তাঁকে সন্দীপ রেড্ডি ভাঙ্গা পরিচালিত প্রভাস, তৃপ্তি দিমরি অভিনীত নতুন ছবি ‘স্পিরিট’-এ দেখা যাবে। এছাড়াও নীতেশ তিওয়ারি পরিচালিত বহু প্রতীক্ষিত ছবি ‘রামায়ণ’-এ রাবণের ভাই বিভীষণ চরিত্রে অভিনয় করছেন তিনি। তবে সবার নজর কেড়েছে তাঁর একটি ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। তিনি এই ছবির পুরো পারিশ্রমিক ক্যানসার আক্রান্ত শিশুদের জন্য দান করার ঘোষণা করেছেন।
বিবেক বলেন, “আমি প্রযোজককে জানিয়ে দিয়েছি, আমি এই ছবির জন্য এক টাকাও নেব না। আমি চাই এই অর্থ ক্যানসারে ভুগছে এমন শিশুদের চিকিৎসায় ব্যয় হোক। আমি বিশ্বাস করি, এটি ভারতীয় সিনেমাকে বিশ্বমঞ্চে নিয়ে যাবে। রামায়ণ শুধুই পৌরাণিক নয়, এটি আমাদের ইতিহাস।”
