আমার ছেলে তিন বছরে এই ঘর বানিয়েছে, মায়ের কথা মনে করে আবেগপ্রবণ দেব

টলিউডের সুপারস্টার, ‘খোকাবাবু’ থেকে শুরু করে ‘ব্যোমকেশ’, ‘প্রধান’ হয়ে ওঠা এবং বর্তমানে ‘রঘু ডাকাত’ রূপে পর্দায় ঝড় তোলা দেব – বাংলা সিনেজগতের অন্যতম সফল কমার্শিয়াল হিরো। একের পর এক হিট ছবি দিয়ে দর্শকদের মাতিয়ে রেখেছেন তিনি। শুধু অভিনয় নয়, রাজনীতির ময়দানেও তার ছক্কা হাঁকানো অব্যহত, বর্তমানে তিনি একজন সাংসদও বটে। তবে তার এই সাফল্যের পথটা সহজ ছিল না। ‘I LOVE YOU’ ছবি দিয়ে পর্দায় বাজিমাত করলেও, তখন নিজের বাড়ি ছিল না তার। কিন্তু খুব বেশি সময় লাগেনি, ক্যারিয়ার শুরুর মাত্র তিন বছরের মধ্যেই তিনি তার স্বপ্নপূরণ করেছিলেন।

দেবের এই লড়াইয়ে তার পরিবারকে তিনি প্রতিটা পদে পাশে পেয়েছেন। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে দেব তার মায়ের মুখে শোনা একটি কথা বলতে গিয়ে কান্না চেপে রাখতে পারেননি। সেই সময়ের কথা বলতে গিয়ে দেব জানান, তখন তিনি সবেমাত্র মাকে মুম্বই থেকে কলকাতায় নিয়ে এসেছেন এবং হাওড়ার একটি বাড়িতে রেখেছিলেন। একদিন সকালে মাকে নিয়ে বেরিয়ে পড়েন দেব, সেদিন কী ঘটেছিল, সে সবটাই তিনি ভাগ করে নেন। তখন তিনি সবেমাত্র কলকাতার বুকে নিজের বাড়ি কিনেছেন।

অভিনেতা বলেন, “মাকে বলে রেখেছিলাম, বাড়ি নিয়েছি। কোন পাড়ায়, কোথায়, আর কিছুই বলিনি। মা শুধু জানে, ছোট্ট একটা বাড়ি নিয়েছি। বম্বে থেকে মাকে যখন নিয়ে এলাম হাওড়ার বাড়িতে, তারপর একদিন সেখান থেকে মাকে বললাম– চল একটা বাড়ি নিয়েছি, দেখে আসি।”

বাড়িটা দেখে মায়ের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া ছিল অপ্রত্যাশিত। দেবের কথায়, “বাড়িটা দেখে মা বললেন– ভাল। এটা এমন কেন? ওটা অমন কেন? এত উঁচু, আমার তো ভয় লাগবে। তুই একটা কাজ কর, জানলাগুলোয় একটা দেওয়াল তুলে দে। আমার সমস্যা হবে।”

এই কথা শুনে দেব কিছুটা হতাশ হয়েছিলেন, কারণ এত কষ্টের একটা বাড়ি। কিন্তু এরপরই মা গাড়ি থেকে নেমে তার দিদাকে ফোন করেন। দেব আবেগপ্রবণ হয়ে বলেন, “মাশোনো, রাজু একটা ঘর নিয়েছে…”

সাক্ষাৎকার দিতে দিতে দেব এখানেই খানিক চুপ হয়ে যান। চোখের কোলে তখন জল। নিজেকে কিছুটা সামলে নিয়ে তিনি বলে ওঠেন, “মা সেদিন বলেছিলেন, আমার ছেলে তিন বছরে এই ঘর বানিয়েছে।” এই কথা বলেই হাউ-হাউ করে কেঁদে ফেলেন দেব। মায়ের চোখে সেই খুশিই যেন দেবের শত পরিশ্রমের সবথেকে বড় পুরস্কার। আজ সেই দেব, টলিপাড়ার বক্স অফিসের লক্ষ্মীলাভের অন্যতম সদস্য। তার এই আবেগঘন মুহূর্ত প্রমাণ করে, সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছেও তিনি তার শিকড় এবং পরিবারের প্রতি তার ভালোবাসার কথা ভোলেননি।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy