বৈশাখের গরমে এসি চালাচ্ছেন? ঘুমের আরামের সঙ্গে ডেকে আনছেন বিপদও!

পশ্চিমবঙ্গে বৈশাখ মাসের তীব্র গরমের সঙ্গী এখন অসহ্য আর্দ্রতা। সব মিলিয়ে রাতের ঘুম কার্যত উধাও। এই পরিস্থিতিতে অনেকেই বাধ্য হয়ে রাতভর এসি চালিয়ে ঘুমান। কিন্তু জানেন কি, রাতের আরামদায়ক ঘুমের পাশাপাশি সারারাত এয়ার কন্ডিশনার চালিয়ে ঘুমানোর বেশ কিছু স্বাস্থ্যঝুঁকিও রয়েছে? বিদ্যুতের বিলের কথা না হয় বাদই দিলেন, কিন্তু একটানা এসি চালালে আপনার শরীরের উপর পড়তে পারে নেতিবাচক প্রভাব।

১. ত্বক ও শ্বাসনালী হয়ে পড়ে শুষ্ক: এসি ঘর থেকে আর্দ্রতা শুষে নেয়। এর ফলে আপনার ত্বক শুষ্ক ও খসখসে হয়ে যেতে পারে। শুধু তাই নয়, নাকের ভেতরের সংবেদনশীল ঝিল্লি, গলা এবং চোখও শুষ্ক হয়ে অস্বস্তি ও শ্বাসকষ্টের কারণ হতে পারে।

২. পেশীতে দেখা দেয় скованность ও ব্যথা: একটানা ঠান্ডা তাপমাত্রায় থাকার কারণে শরীরের পেশীতে সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে ঘাড়, পিঠ বা কোমরের পেশী শক্ত হয়ে যেতে পারে এবং তীব্র ব্যথা অনুভূত হতে পারে।

৩. বাড়ে ঠান্ডা লাগা ও শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা: রাতের বেলা আমাদের শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা কমে যায়। এসির অতিরিক্ত ঠান্ডা এই স্বাভাবিক প্রক্রিয়াকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। ফলে দেখা দিতে পারে ঠান্ডা লাগা, গলা ব্যথা বা সর্দির মতো সমস্যা। যাদের অ্যাজমা বা ব্রঙ্কাইটিসের মতো শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে এটি আরও মারাত্মক হতে পারে।

৪. অ্যালার্জি ও অ্যাজমার প্রকোপ বৃদ্ধি: যদি এসির ফিল্টার নিয়মিত পরিষ্কার না করা হয়, তবে এটি ধুলো, পরাগরেণু এবং অন্যান্য অ্যালার্জেন বাতাসে ছড়িয়ে দেয়। এর ফলে অ্যালার্জি এবং হাঁপানির সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারে। তাই এসির সঠিক পরিচর্যা করা অত্যন্ত জরুরি।

৫. শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে ব্যাঘাত: একটানা কৃত্রিম ঠান্ডায় থাকার ফলে শরীরের নিজস্ব তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার স্বাভাবিক ক্ষমতা ব্যাহত হতে পারে। এর ফলে সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর বাইরের গরম পরিবেশে গেলে শরীর সহজে মানিয়ে নিতে পারে না এবং অসুস্থ বোধ হতে পারে।

তবে যদি এসি চালানো একান্তই প্রয়োজন হয়, তবে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। প্রথমত, এসির তাপমাত্রা খুব কম না রেখে মাঝারি তাপমাত্রায় (যেমন ২৪-২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস) রাখুন। খেয়াল রাখবেন যেন সরাসরি এসির ঠান্ডা বাতাস আপনার শরীরে না লাগে। সম্ভব হলে টাইমার ব্যবহার করে মাঝরাতে বা ভোরের দিকে এসি বন্ধ করে দিন। এছাড়াও, ঘরকে অতিরিক্ত ঠান্ডা করার চেয়ে আরামদায়ক তাপমাত্রা বজায় রাখাই বুদ্ধিমানের কাজ। সুস্থ থাকতে এসির সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন হওয়া জরুরি।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy