দিনে কতগুলো ডিম খাওয়া নিরাপদ? জেনেনিন কী বলছে বিশেষজ্ঞরা?

প্রোটিনের অন্যতম সেরা উৎস ডিম, যা প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই একটি অপরিহার্য খাদ্য। কিন্তু পুষ্টিগুণে ভরপুর এই খাবারটি কতটুকু পরিমাণে খাওয়া উচিত, তা নিয়ে অনেকের মনেই প্রশ্ন থাকে। অতিরিক্ত ডিম খেলে কি স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিমাণ বুঝে ডিম খেলে এটি যেমন স্বাস্থ্যকর, তেমনই অতিরিক্ত খেলে কিছু ঝুঁকির কারণ হতে পারে।

ডিমে কী কী পুষ্টি উপাদান থাকে?
একটি মাঝারি আকারের ডিমে থাকে প্রায় ৬-৭ গ্রাম প্রোটিন, ১৮৬ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল এবং ভিটামিন B12, D, ও A। এছাড়া, এতে রয়েছে কোলিন, যা মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী, এবং লুটিন ও জিয়্যাক্সানথিন, যা চোখের যত্নে সাহায্য করে। ডিমের মধ্যে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড (বিশেষ করে DHA) হৃদপিণ্ড ও মস্তিষ্কের কার্যকারিতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

কতটুকু ডিম নিরাপদ?
পুষ্টিবিদদের মতে, একজন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি দিনে ১-৩টি ডিম অনায়াসে খেতে পারেন। এর মাধ্যমে তারা দৈনিক প্রোটিন চাহিদার একটি বড় অংশ পূরণ করতে পারেন। তবে, যাদের উচ্চ কোলেস্টেরল বা হৃদরোগের মতো সমস্যা রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

অতিরিক্ত ডিম খাওয়ার ঝুঁকি
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, দিনে ৩টির বেশি ডিম খেলে কিছু স্বাস্থ্যঝুঁকি দেখা দিতে পারে:

কোলেস্টেরল বৃদ্ধি: একটি ডিমেই প্রচুর কোলেস্টেরল থাকে। অতিরিক্ত ডিম খেলে শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে, যা হার্ট অ্যাটাক বা ব্লক হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়।

কিডনির ওপর চাপ: ডিমের উচ্চ প্রোটিন মাত্রা কিডনির ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে, বিশেষ করে যদি পর্যাপ্ত পানি পান না করা হয়।

হজমের সমস্যা: কিছু মানুষের ক্ষেত্রে ডিম বেশি খেলে বদহজম, গ্যাস বা পেট ফাঁপার মতো সমস্যা দেখা দেয়।

কীভাবে ডিম খাবেন?
ডিম খাওয়ার পদ্ধতিও এর স্বাস্থ্য উপকারের ওপর প্রভাব ফেলে।

সেদ্ধ ডিম: এটি সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর বিকল্প, কারণ এতে ক্যালোরি ও কোলেস্টেরল কম থাকে।

কম তেলে রান্না: ডিম ভাজার সময় অতিরিক্ত তেল ব্যবহার করলে ট্রান্সফ্যাট ও কোলেস্টেরল বেড়ে যায়। তাই অল্প তেলে পোচ বা স্ক্র্যাম্বলড ডিম তৈরি করা ভালো।

সকালের নাস্তা: সকালে ডিম খেলে এটি দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে এবং সারাদিনের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি জোগায়।

ডিম একটি চমৎকার খাদ্য হলেও, ভারসাম্যপূর্ণ জীবনযাত্রার জন্য অন্যান্য প্রোটিন উৎস যেমন মুরগির মাংস, মাছ, ডাল, দুধ এবং বাদামকেও খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। সবশেষে, আপনার স্বাস্থ্য যদি সুস্থ থাকে, তাহলে দিনে ১-২টি ডিম খাওয়া নিরাপদ। কিন্তু কোনো শারীরিক সমস্যা থাকলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy