কলকাতা: কলকাতার আমহার্স্ট স্ট্রিটে অবস্থিত প্রায় ১০০ বছরের পুরনো একটি স্কুল, ‘চিলড্রেনস হ্যাপি হোম’। কিন্তু গত ১১ নভেম্বর থেকে এই স্কুলে চলছে চরম জল-সঙ্কট। খাবার জল থেকে শুরু করে দৈনন্দিন ব্যবহারের জল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে বাতিল করে দেওয়া হয়েছে স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষাও।
জানা গিয়েছে, জগদ্ধাত্রী পুজোর সময় থেকে রাস্তার উপরে পাইপ লাইনের কাজ শুরু হয়েছিল। সেই কাজ চলাকালীন কোনোভাবে স্কুলের মূল জল সরবরাহকারী পাইপ লাইনটি ফেটে যায়। এর ফলে স্কুলের জল সরবরাহ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে পড়ে।
শিক্ষিকাদের দুর্ভোগ, ফিরতে হল পরীক্ষার্থীদের
স্কুলে প্রায় ৮০০ ছাত্রছাত্রী এবং ৪৫ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা (যার মধ্যে শিক্ষিকার সংখ্যা বেশি) রয়েছেন। জল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় স্কুল বন্ধের নোটিস দেওয়া হলেও শিক্ষিকাদের স্কুলে আসতে হচ্ছে। সবচেয়ে বড় সমস্যা তৈরি হয়েছে ওয়াশরুম নিয়ে। স্কুলের শিক্ষিকাদের বর্তমানে প্রায় ৫০০ মিটার দূরে গিয়ে শৌচাগার ব্যবহার করতে হচ্ছে।
জল না থাকার খবর সম্প্রচার হওয়ার পর কলকাতা পুরসভা তৎপর হয়। তড়িঘড়ি স্কুলে জলের একটি অস্থায়ী ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুরকর্মীরা একটি প্রাইমারি লাইন তৈরি করে দিয়েছেন, যেখান থেকে আপাতত স্কুল জল পাচ্ছে। স্থায়ী লাইনের জন্য মাটির নিচ থেকে কাজ শুরু করেছে কলকাতা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন (KMC)।
এই কাজ চলাকালীন অঙ্কের পরীক্ষা দিতে এসেছিল দুই ছাত্র। স্কুলের নোটিস ঠিক করে না দেখায় তারা পরীক্ষার দিন উপস্থিত হয়েছিল। জলের অভাবে পরীক্ষা বাতিল হওয়ায় তাদেরও বাড়ি ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
স্থায়ী সমাধান না হলে স্কুল খুলবে না
দায়িত্বপ্রাপ্ত সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার জানিয়েছেন যে ‘যুদ্ধকালীন তৎপরতায়’ কাজ শুরু করা হয়েছে এবং একটি লাইনের মাধ্যমে অস্থায়ীভাবে জল সরবরাহ চালু হয়েছে। স্থায়ী লাইনের কাজ দ্রুত শেষ করার চেষ্টা চলছে।
তবে শিক্ষিকারা জানিয়েছেন, আপাতত যে জল আসছে তা পানীয় জল হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। তাই সমস্ত সমস্যা স্থায়ীভাবে সমাধান না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা স্কুল খুলতে নারাজ। যদিও আগের চেয়ে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে, কিন্তু সম্পূর্ণ সমাধান না হওয়ায় প্রায় ৮০০ শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ এখনও অনিশ্চিত।