“মদ্যপ অবস্থায় পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি”-TMC নেতার স্বামীর ভাইরাল ভিডিও ঘিরে তুঙ্গে রাজনৈতিক ঝড়!

রাত দুটোর নিস্তব্ধতা ভেঙে জাতীয় সড়কে চরম উত্তেজনা। মদ্যপ অবস্থায় পুলিশের নাকা চেকিংয়ে ব্যারিকেড ভেঙে ধাক্কা, তারপর খোদ উর্দিধারীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি—অভিযোগ সরাসরি শাসকদলের নেতার বিরুদ্ধে! ভাইরাল হওয়া এক ভিডিও ঘিরে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় ফের রাজনৈতিক পারদ চড়েছে। অভিযুক্ত, তৃণমূলের গঙ্গারামপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিউটি সরকারের স্বামী সঞ্জয় সরকার, যাঁর খালি গায়ে পুলিশের সঙ্গে বিতর্কে জড়ানোর এবং ধস্তাধস্তির দৃশ্য এখন নেটদুনিয়ায় চর্চার বিষয়।

ঘটনাটি ঘটেছিল প্রায় এক মাস আগে, গত ১৭ মে, রাত প্রায় ২টো নাগাদ। বংশীহারী থানার অন্তর্গত বুনিয়াদপুরে ৫১২ নম্বর জাতীয় সড়কের বিশ্রামাগার সংলগ্ন এলাকায় তখন জেলার পুলিশ একটি বিশেষ নাকা চেকিং চালাচ্ছিল। অভিযোগ, সেই সময়ই মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালিয়ে পুলিশ ব্যারিকেডে সজোরে ধাক্কা দেন সঞ্জয় সরকার। এরপরই শুরু হয় তুমুল বচসা, যা একপর্যায়ে ধস্তাধস্তিতে রূপ নেয়। ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, খালি গায়ে সঞ্জয় সরকার পুলিশের সঙ্গে বিতর্কিত ভাষায় তর্ক করছেন এবং এক পর্যায়ে শারীরিক সংঘাতেও জড়াচ্ছেন।

এই ঘটনা ঘটেছিল এক মাস আগে, কিন্তু ভিডিওটি হঠাৎ করে গত পরশু (প্রায় এক মাস পর) বিজেপির জেলা সভাপতি স্বরূপ চৌধুরী তাঁর ফেসবুক টাইমলাইনে পোস্ট করেন। আর এর পরপরই ঘটনাটি নিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র রাজনৈতিক চাপানউতর। ভিডিওর সত্যতা অবশ্য আজতক বাংলার তরফে যাচাই করা হয়নি।

অভিযুক্ত সঞ্জয় সরকার সরাসরি এই ঘটনাকে ‘রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র’ বলে দাবি করেছেন। তাঁর অভিযোগ, ঘটনার এক মাস পর পুলিশ ইচ্ছাকৃতভাবে ভিডিওটি বিরোধী দলের নেতাদের হাতে তুলে দিয়েছে।

অন্যদিকে, তৃণমূল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি এবং সঞ্জয়ের স্ত্রী বিউটি সরকার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “গাড়িটি হয়তো সেদিন ও বাড়ি থেকে নিয়ে বেরিয়েছিল। বোর্ড খুলে রাখতে ভুল হয়েছে। ভিডিওটা দেখেছি, কিন্তু আমি কিছু বলব না। পুলিশই তদন্ত করে জানাবে।” তাঁর এই মন্তব্য থেকে বোঝা যায়, দলের অন্দরেও সঞ্জয়ের পাশে তেমন কেউ দাঁড়াচ্ছেন না।

ঘটনাটি সামনে আসতেই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পুলিশ সুপার চিন্ময় মিত্তল জানিয়েছেন, বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এই ঘটনা শাসকদলের অন্দরেও অস্বস্তি তৈরি করেছে। দলীয় সূত্রে খবর, এমন ঘটনায় দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে, এবং এর ফলে সঞ্জয়ের পাশে তেমন কেউ দাঁড়াতে চাইছে না।

একদিকে মদ্যপ অবস্থায় পুলিশের কাজে বাধা এবং নিগ্রহের অভিযোগ, অন্যদিকে দীর্ঘ এক মাস পর ভিডিও প্রকাশ হয়ে রাজনৈতিক রঙ লাগা – সব মিলিয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর আপাতত এই ‘ভিডিও বিতর্ক’ নিয়েই সরগরম। তদন্তের পর সত্য কী বেরিয়ে আসে এবং এর রাজনৈতিক পরিণতি কী হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy