শরীরে আয়রনের অভাব হলে দেখা দিতে পারে একাধিক স্বাস্থ্য জটিলতা। এর মধ্যে অন্যতম হলো রক্ত স্বল্পতা বা অ্যানিমিয়া। আয়রনের ঘাটতির কারণে শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রাও উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়, যা দুর্বলতা ও ক্লান্তি সহ বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি করে।
তবে আয়রনের ঘাটতি পূরণের জন্য শুধু ওষুধ খাওয়াই একমাত্র সমাধান নয়। বরং আপনার প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় কিছু বিশেষ খাবার যোগ করলেই দ্রুত এই ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব। আসুন জেনে নেওয়া যাক, সেই আয়রন সমৃদ্ধ খাবারগুলো কী কী:
সবুজ শাকসবজি: আয়রনের পাওয়ার হাউস
আয়রনের অভাব মেটাতে হলে আপনার পাতে অবশ্যই রাখতে হবে বিভিন্ন ধরনের সবুজ শাকসবজি। কলার থোড় ও মোচা খেলে শরীরে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বজায় থাকে। এছাড়াও হেলেঞ্চা শাক আয়রনের একটি চমৎকার উৎস। আয়রনের ঘাটতি পূরণ এবং হিমোগ্লোবিনের সঠিক মাত্রা বজায় রাখার জন্য এই শাকের জুড়ি মেলা ভার। পালং শাকও আয়রনের অন্যতম ভাণ্ডার। তাই প্রতিদিন না হলেও, মাঝে মাঝেই আপনার খাদ্যতালিকায় পালং শাক অন্তর্ভুক্ত করুন।
মসুরের ডাল: প্রোটিনের সাথে আয়রনের যোগান
মসুর ডাল শুধু প্রোটিনের একটি চমৎকার উৎসই নয়, এটিতে প্রচুর পরিমাণে আয়রনও বিদ্যমান। তাই প্রতিদিনের খাবারে মসুর ডাল যোগ করা আপনার শরীরের আয়রনের চাহিদা পূরণে সহায়ক হতে পারে। স্বাদের ভিন্নতা আনতে মসুর ডাল সেদ্ধর মধ্যে সামান্য মাখন ও কাঁচা মরিচ যোগ করতে পারেন। অথবা ডাল সেদ্ধ করার সময় বড় করে কাটা পেঁয়াজ ব্যবহার করলে স্বাদ ও পুষ্টি দুটোই পাওয়া যায়।
কুমড়োর বীজ ও কাবলি ছোলা: নিরামিষাশীদের জন্য বিশেষ উৎস
যারা নিরামিষ খাবার খান, তাদের জন্য আয়রন সমৃদ্ধ খাবারের তালিকায় কুমড়োর বীজ ও কাবলি ছোলার নাম অবশ্যই রাখতে হবে। কুমড়োর বীজ নিরামিষ বিভিন্ন পদে বা ডালের উপর ছড়িয়ে দিলে খাবারের স্বাদ যেমন বাড়ে, তেমনি শরীরে আয়রনের যোগানও হয়। অন্যদিকে, কাবলি ছোলা সেদ্ধ করে অথবা ঘুগনি বানিয়ে খেলেও উপকার পাওয়া যায়। তবে মনে রাখবেন, কাবলি ছোলা পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত, অতিরিক্ত খেলে পেটের সমস্যা হতে পারে।
সুতরাং, শরীরে আয়রনের ঘাটতি পূরণের জন্য এই খাবারগুলোকে আপনার দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করুন। প্রাকৃতিক উপায়ে আয়রনের অভাব পূরণ করাই শরীরের জন্য সবচেয়ে ভালো। তবে গুরুতর ঘাটতি থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।