স্কুল-কলেজ, বাড়ি কিংবা অফিস – কোনো জায়গাতেই মুখ ফসকে একটিও কটু কথা বেরিয়ে গেলে চরম অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। গালি দেওয়াকে বরাবরই খারাপ চোখে দেখা হয়। তবে সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে সম্পূর্ণ ভিন্ন কথা। গবেষকদের দাবি, গালিগালাজ আসলে মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে, যা কিনা স্বাস্থ্যের পক্ষেও ভালো।
একাধিক মার্কিন গবেষণায় মানসিক চাপ, অবসাদ ও অতিরিক্ত উত্তেজনা কমানোর ক্ষেত্রে গালিগালাজের ইতিবাচক ভূমিকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। ব্রিটিশ গবেষক এবং মনোবিজ্ঞানীরাও এই ধারণার সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন।
কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের তাত্ত্বিক ও ফলিত ভাষাতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. কিরিকুস অ্যান্টনিও জানান, গালিগালাজ আসলে মন থেকে জমে থাকা রাগ ও ক্ষোভ বের করে মানসিক চাপ কমানোর একটি সহজ উপায়।
অ্যান্টনিও’র মতে, যেসব মানুষ উত্তেজিত হওয়া সত্ত্বেও গালি দিতে পারেন না বা দেন না, তাদের মধ্যে মানসিক অবসাদ, উচ্চ রক্তচাপ এবং বিভিন্ন স্নায়বিক সমস্যা দেখা দেওয়ার প্রবণতা বাড়ে। শুধু তাই নয়, কিছু ক্ষেত্রে এই ব্যক্তিদের মধ্যে দ্বৈত ব্যক্তিত্বের (স্প্লিট পার্সোনালিটি) সমস্যাও দেখা যেতে পারে। এর বিপরীতে, যারা সহজে গালাগাল দিয়ে নিজেদের ভেতরের চাপ মুক্ত করতে পারেন, তারা তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি সুস্থ থাকেন।
অতএব, মার্কিন গবেষক এবং মনোবিজ্ঞানীদের পরামর্শ, মাত্রাতিরিক্ত মানসিক চাপ, অবসাদ ও ক্ষোভ কাটাতে প্রয়োজনে নির্জনে গালিগালাজ দেওয়া যেতে পারে। তবে অবশ্যই স্থান, কাল ও পাত্র বিবেচনা করা জরুরি। জনসমক্ষে বা সম্মানীয় ব্যক্তিদের সামনে গালি দেওয়া অনুচিত।
সুতরাং, পরেরবার যখন আপনি তীব্র মানসিক চাপে থাকবেন, তখন সম্ভবত একটি ছোট্ট, ব্যক্তিগত গালি আপনার ভেতরের ঝড় শান্ত করতে সাহায্য করতে পারে – এমনটাই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। তবে অবশ্যই এর ব্যবহার যেন নিয়ন্ত্রিত এবং পরিস্থিতি-সাপেক্ষ হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।