উচ্চ রক্তচাপে খাদ্যাভ্যাস কেমন হওয়া উচিত, জানা না থাকলে জেনেনিন

বর্তমানে উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন সবার কাছে অতি পরিচিত। রক্তের উচ্চ চাপকেই মূলত উচ্চ রক্তচাপ বলা হয়। একজন মানুষের স্বাভাবিক রক্তচাপ সিস্টোলিক ১২০ এবং ডায়াস্টোলিক ৮০ হয়ে থাকে। এই রক্তচাপ যখন নিয়মিত রক্তচাপের থেকে বেশি অর্থাৎ স্বাভাবিক থেকে বেশি হয় (সিস্টোলিক ১৪০ এবং ডায়াস্টোলিক ৯০) তখন তাকে উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন বলা হয়ে থাকে।

বিভিন্ন কারণে উচ্চ রক্তচাপ হয়ে থাকে। অতিরিক্ত ওজন, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, মানসিক চাপ, ধূমপান ও মদপান উচ্চ রক্তচাপের অন্যতম কারণ। এ ছাড়া কম শারীরিক পরিশ্রম, কম ব্যায়াম করা বা বংশগত কারণেও উচ্চ রক্তচাপ হতে পারে। তাছাড়া কিছু শারীরিক অসুস্থতার কারণেও উচ্চ রক্তচাপ হয়ে থাকে; যেমন: কিডনি রোগ, ডায়াবেটিস ও থাইরয়েডের সমস্যার কারণে।

খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এ ক্ষেত্রে যা খাওয়া যেতে পারে—
১. প্রতিদিন একটি সম্পূর্ণ ডিম খেতে পারবেন।
২. সরবিহীন এক কাপ দুধ খাওয়া যাবে।
৩. দেশীয় এবং টক ফল (ভিটামিন-সিযুক্ত) ফল খেতে পারবেন। যেমন: আমলকি, লেবু, আমড়া, পেয়ারা ইত্যাদি।
৪. কলা খেতে পারবেন। এতে পটাশিয়াম থাকে, যা রক্তচাপ কমাতে সহায়তা করে।
৫. সবুজ শাক-সবজি খাওয়া যাবে।
৬. অলিভ অয়েল খাওয়া যেতে পারে। এতে ওমেগা ৯ থাকে, যা উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
৭. টমেটোতে লাইকোপেন থাকে, যা রক্তচাপ কমাতে সহায়তা করে।
৮. কম চর্বিযুক্ত মাংস খাওয়া যাবে।

যা এড়িয়ে চলতে হবে বা কম গ্রহণ করতে হবে—
১. অতিরিক্ত লবণ ও চিনিজাতীয় খাবার কম খাওয়া।
২. কম সোডিয়ামযুক্ত খাবার গ্রহণ করা।
৩. টিনজাত খাবার ও প্রসেসড খাবার কম খাওয়া।
৪. তেলযুক্ত খাবার এবং ভাজাপোড়া খাবার এড়িয়ে চলা।
৪. অতিরিক্ত লবণ বা পাতে লবণ খাওয়া যাবে না।
৫. চর্বিযুক্ত মাংস এড়িয়ে চলতে হবে।
৬. সফট ড্রিংকস, বেভারেজ এড়িয়ে চলতে হবে।
৭. কেক, পেস্ট্রি, কুকিজ, পুডিং, বার্গার, সসেজ, বেকন এড়িয়ে চলতে হবে (এতে স্যাচুরেটেড ফ্যাট বেশি থাকে, যা উচ্চ রক্তচাপ বাড়াতে সাহায্য করে)।
৮. মসলাযুক্ত খাবার বা মসলাদার খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
৯. অতিরিক্ত কফি পান করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
১০. ধূমপান ও অ্যালকোহল গ্রহণ করা যাবে না।

কিছু প্রচলিত ভ্রান্ত ধারণা
১. লবণ ভেজে খাওয়া যাবে, এতে ক্ষতি হয় না। না, উচ্চ রক্তচাপের রোগী অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ করতে পারবেন না। সেটা কাঁচা বা ভাজা যা-ই হোক।

২. পাতে লবণ খাওয়া যাবে না, তাই তরকারিতে বেশি দিলে সমস্যা নেই। উচ্চ রক্তচাপের রোগীর জন্য লবণ যেভাবেই গ্রহণ করা হোক, সেটাই রক্তচাপ বাড়াবে। তাই লবণ সীমিত করতে হবে। যতটা সম্ভব।

৩. উচ্চ রক্তচাপ থাকলে ডিমের কুসুম খাওয়া যাবে না। উচ্চ রক্তচাপ থাকলেও প্রতিদিন একটি কুসুমসহ ডিম খেতে পারবেন।

নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম, নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন ও ভালো খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। সবাই সুস্থ থাকুন, আনন্দে থাকুন।

Related Posts

© 2024 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy