আমাদের অতি পরিচিত একটি গাছ লজ্জাবতী আবার কেউ কেউ এক বলেন লাজুক লতা। এটি একটি বর্ষজীবি গুল্ম আগাছা বা ওষুধী গাছ। অনেকটা তেতুল পাতার মত।
হাত ও পায়ের স্পর্শে লজ্জ্বাবতীর পাতা বুঁজে এসে বন্ধ হয়ে যায়। পাতা সরু ও লম্বাটে, সংখ্যায় ২ থেকে ২০ জোড়া। এর ফুলগুলি বেগুনী ও গোলাপী রঙের। এর পাতায় এ্যাকোলয়ড়ে ও এড্রেনালিন এর সব উপকরণ থাকে।
এছাড়াও টিউগুরিনস এবং মুলে ট্যানিন থাকে। যা পুরুষাঙ্গের শিথীলতা দূর করা সহ আরো নানাবিধ রোগ সারাতে ব্যবহার হয়। লজ্জাবতী লতার সমগ্র উদ্ভিদ ঔষধ হিসাবে ব্যবহৃত হয়। এর ঔষধি গুণগুলি ধারাবাহিক ভাবে তা আলোচনা করা হলো।
দাঁতের মাড়ির ক্ষতঃ দাঁতের মাড়ির ক্ষত সারাতে গাছ সহ ১৫ থেকে ২০ সে.মি. লম্বা মূল জলেতে সিদ্ধ করে সে জল দিয়ে ৭ দিন দিনে ৩ বার কুলকুচা করলে ভালো হয়।
পুরুষাঙ্গের শৈথিল্যঃ লজ্জাবতীর বীজ দিয়ে তৈরি তেল লাগিয়ে আস্তে আস্তে মালিশ করলে তা পুরুষাঙ্গ দৃঢ় হয়। স্বাভাবিক উত্তেজনা ফিরে আসে। স্ত্রী যৌনাঙ্গের ক্ষত সারাতে যে কোন কারনে যনিপথে ক্ষত হলে, প্রথমিক স্তরে মাঝে মাঝে অথবা প্রায় রোজই অল্প স্রাব চলতে থাকে, একটা আশটে গন্ধ, কখনো বা একটু লালচে স্রাব হয়, এসব ক্ষেত্রে চিকিৎসক সাবধান করে থাকেন, এটি পরিণামে ক্যান্সার হয়ে যেতে পারে।
এক্ষেত্রে দুধ জলে সিদ্ধ করা লজ্জাবতীর নির্জাস দিনে ২ বার খেলে এ রোগ উপশম হয়। একই সাথে লজ্জাবতীর নির্জাস দিয়ে ডুশ দিলে বা যোনিপথ ধুলে তাড়াতাড়ি ক্ষত সেরে যায়।
আঁধার যোনি ক্ষতেঃ এ বিচিত্র রোগটি কৃষ্ণপক্ষে বেড়ে যায় আর শুক্লপক্ষে শুকাতে থাকে। এ ক্ষতটি হয় সাধারণত হাটুর নিচে আর না হয় কুঁচকির দু’ধারে। এক্ষেত্রে গাছও পাতা ( মূল বাদে ) ১০ গ্রাম শুধু জল দিয়ে নির্জাস করে খেতে হয় এবং ঐ নির্জাস দিয়ে মুছতে হয়।
রমনে অতৃপ্তিঃ কয়েকটি সন্তান হওয়ার পর যোনিদ্বার অনেকটা শিথিল হয়ে যায়, এক্ষেত্রে লজ্জাবতীর নির্জাস দিয়ে ডুশ নেওয়ায়, আর গাছের পাতা সিদ্ধ নির্জাস দিয়ে তৈরি তেলে ন্যাকড়া ভিজিয়ে যোনিদ্বারে দিয়ে রাখলে (Vaginal plugging) ভাল ফল পাওয়া যায়। এছাড়া অন্ডকোষের জল জমা সারাতে পাতার পেস্ট ব্যবহার করা হয়।
আমাশয়ঃ অনেকের আছে পুরানো আমাশয়। মল ত্যাগের বেগ হলে আর অপেক্ষা করতে পারে না। আবার অনেকের শক্ত মলের গায়ে সাদা সাদা আম জড়ানো থাকে। এক্ষেত্রে ১০ গ্রাম লজ্জাবতীর ডাঁটা ও পাতা ৪ কাপ জলেতে সিদ্ধ করে ১ কাপ থাকতে নামিয়ে ছেঁকে নিতে হবে। এ নির্জাস খেলে তারা অবশ্যই উপকার পাবেন।
ঘামের দুর্গন্ধ দুর করতেঃ অনেকের ঘামে দুর্গন্ধ হয় এবং জামায় বা গেঞ্জিতে হলদে দাগ লাগে, এক্ষেত্রে লজ্জাবতী গাছের ডাঁটা ও পাতার নির্জাস তৈরি করে বগল ও শরীর মুছতে হবে বা লাগাতে হবে। তাহলে এ দুর্গন্ধ দুর হবে।
কোষ্ঠকাঠিন্যঃ এক্ষেত্রে মূল ৭/৮ গ্রাম থেঁতো করে সিদ্ধ করতে হবে এবং ছেঁকে ঐ জলটা খেতে হবে। তাহলে উপকার হবে। সাদা ফুলের লজ্জ্বাবতীর পাতা ও মুল পিষে রস বের করে নিয়মিত খেলে পাইলস্ ও ফিস্টুলায় আরাম পাওয়া যায়।