দীর্ঘ ১৮ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে আইপিএল ট্রফি জিতল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (RCB)। মঙ্গলবার রাতে নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে পাঞ্জাব কিংসকে শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনালে হারিয়ে আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আরসিবি। এই ঐতিহাসিক জয়ের পর আবেগে ভাসলেন দলের প্রাণভোমরা বিরাট কোহলি। জয় নিশ্চিত হতেই হাঁটু মুড়ে মাটিতে বসে পড়েন তিনি, আর যখন উঠলেন, তাঁর দু’চোখ ছিল অশ্রুসজল।
আইপিএলের শুরু থেকে একটি মাত্র ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে খেলা একমাত্র ক্রিকেটার হলেন বিরাট কোহলি। অধিনায়ক হিসেবে বহুবার দলকে ট্রফির খুব কাছে নিয়ে গেলেও শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছিলেন। তাই এই বহু প্রতীক্ষিত সাফল্য তাঁর কাছে ছিল এক অন্যরকম প্রাপ্তি।
“ভেবেছিলাম এই মুহূর্তটা হয়তো আসবে না”
দলের জয়ের পর স্ত্রী অনুষ্কা শর্মা এবং পুরনো সতীর্থ ও বন্ধু এবি ডি’ভিলিয়ার্সকে কাছে পেয়ে শিশুর মতো আনন্দে মেতে ওঠেন বিরাট। দুই বিশ্বকাপ এবং দুই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ী ভারতীয় দলের এই অবিসংবাদী নায়ক ফ্র্যাঞ্চাইজি দলের কাঙ্খিত সাফল্য নিয়ে বলেন, “ভেবেছিলাম এই মুহূর্তটা হয়তো আসবে না।”
নিজের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করতে করতেই বিরাট আরও বলেন, “যৌবন, কেরিয়ারের সেরা সময়, অভিজ্ঞতা এই দলটাতে আমি উজাড় করেছি। প্রত্যেক মরসুমে ট্রফিটা জেতার চেষ্টা করে গিয়েছি। সমস্তকিছু করেছি তার জন্য। শেষমেশ ভেবেছিলাম এই দিনটা হয়তো আর আসবে না। তাই জয়ের পর আবেগকে বশে আনার চেষ্টা করছি। প্রচণ্ড উত্তেজক একটা টুর্নামেন্ট এটা। বড় বড় সকল টুর্নামেন্ট জিততে চাই আমি। তাই এই জয়ের পর আজ রাতে শিশুর মত ঘুমবো আমি।” বিরাটের এই কথাগুলি কোটিপতি লিগে একজন ক্রিকেটারের তাঁর দলের প্রতি ভালোবাসার এক নতুন বেঞ্চমার্ক স্থাপন করেছে।
কিংবদন্তিদের প্রতি সম্মান
জয়ের পর ট্রফি তোলার মুহূর্তে আরসিবি ফ্র্যাঞ্চাইজির আরও দুই কিংবদন্তি ক্রিস গেইল এবং এবি ডি’ভিলিয়ার্সকে মঞ্চে ডেকে নেওয়া হয়। ডি’ভিলিয়ার্সকে নিয়ে কোহলি বলেন, “এই দলটার জন্য এবিডি যা করেছে তা অসামান্য। আমি ওকে বলেছি এই ট্রফিটা যতটা আমাদের, ঠিক ততটাই তোমার। অবসরের চার বছর পরেও ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ সেরার নজির ওরই ঝুলিতে। তাই পোডিয়ামে ওর উপস্থিতি প্রাপ্য।”
রুদ্ধশ্বাস ফাইনালে প্রথমে ব্যাট করে আরসিবি নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৯০ রান তোলে। দলের হয়ে সর্বাধিক ৩৫ বলে ৪৩ রান করেন কোহলি। জবাবে পাঞ্জাব কিংস শশাঙ্ক সিংয়ের ৩০ বলে ৬১ রানের দুরন্ত লড়াই সত্ত্বেও ৭ উইকেটে ১৮৪ রানে শেষ করে তাদের ইনিংস, ফলে ৬ রানে ম্যাচ জিতে নেয় আরসিবি। এই জয় শুধু আরসিবি ভক্তদের নয়, বরং ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে এক বিশেষ স্থান করে নিল।