বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন ক্রিকেট ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ আইপিএলে পরপর দুই মরসুমে দুটি ভিন্ন দলের হয়ে ট্রফি জয় – এমনটা সচরাচর কল্পনাতীত। তবে এই অসাধ্য সাধন করে দেখালেন ইংরেজ উইকেটরক্ষক-ব্যাটার ফিল সল্ট। গত মরশুমে কলকাতা নাইট রাইডার্সের সঙ্গে ট্রফি জেতার পর, এবার রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর (RCB) জার্সিতে আরও এক খেতাব এল তাঁর ঝুলিতে।
উল্লেখ্য, গত মরশুমে কেকেআর-এর ট্রফি জয়ের সময় দেশের হয়ে খেলার জন্য সল্ট দলের সাথে ছিলেন না। তবে এই মরসুমে তিনি শুধু খেললেনই না, আবারও আইপিএল জিতলেন। তাও আবার গত মরশুমে তাঁর অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ারের বর্তমান দল পাঞ্জাব কিংসকে হারিয়েই। টানা দ্বিতীয়বার ট্রফি জিতে আনন্দে আত্মহারা সল্ট দিকজ্ঞান হারিয়ে ফেলেছেন। আইপিএলের ফাইনাল ম্যাচ শেষে সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “এই অনুভূতিটা ভাষায় ব্যক্ত করা যাবে না। আমি কোথায় আছি, কী করছি কিছুই জানি না। এই কদিন খুব একটা ঘুম হয়নি। আমার ভাগ্য সঙ্গে নিয়ে এসেছে একজন (সদ্যোজাত সন্তান)। জয়ের কোনও সীমা, পরিসীমা নেই আমার।”
আরসিবি সমর্থকদের গুণগান
এরপরেই আরসিবি সমর্থকদের ভূয়সী প্রশংসা শোনা যায় ইংরেজ তারকার মুখে। তিনি বলেন, “আমরা যেখানেই যাই সমর্থন পাই। এই দলের সমর্থকদের কিছু বলার নেই। আমরা ওদের ভীষণ ভালবাসি। আমাদের সমর্থন করার জন্য, দলে দলে মাঠে আসার জন্য অনেক ধন্যবাদ। আমরা আজও শুরুতে খানিকটা পিছিয়েই ছিলাম। কিন্তু তারপরেই মাঠে সমর্থকদের গর্জন শুনতে পাই। ওরা হয়তো জানে না, তবে ওরাই আমাদের অনেক অনেক (হারা) ম্যাচ জিততে সাহায্য করেছে।”
কোহলির স্বপ্নপূরণের বছর
তবে টানা দ্বিতীয় মরসুমে সল্টের এটা দ্বিতীয় খেতাবজয় হলেও, বিরাট কোহলির জন্য এটা ছিল প্রথম আইপিএল ট্রফি। দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে বারংবার চেষ্টা করেও ব্যর্থতাই হাতে এসেছিল। কিন্তু ২০২৫ সালটাই যেন তাঁর স্বপ্নপূরণের বর্ষ। হ্যারি কেন এ বছরই কেরিয়ারের প্রথম ট্রফি জিতেছেন। ৯১ বছর পর খেতাব জিতেছে গো আহেড ইগলস, সাত দশক পর ট্রফি এসেছে বলনিয়ার ঘরে। মঙ্গলবার, শেষমেশ পাঞ্জাব কিংসকে ছয় রানে হারিয়ে অবশেষে আইপিএল ট্রফি জিতলেন বিরাট কোহলি ও তাঁর রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু দল।
আবেগে ভাসলেন কিং কোহলি
দল যতই ট্রফি ঘরে তোলার কাছে এগিয়েছে, ততই আবেগে ভেসেছেন কোহলি। আর ম্যাচ শেষ হতেই মাটিতে শুয়ে পড়ে কান্নায় ভাসলেন তিনি। বছর দেড়েক আগে আহমেদাবাদের এই নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামেই বিশ্বকাপ ফাইনালে হেরে কান্নায় ভেঙেছিলেন কোহলি। তবে এবারের কান্না আনন্দের, স্বপ্নপূরণের। যে মাঠে বিশ্বকাপ ট্রফি হাতছাড়া হয়েছিল, সেই নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামেই কোহলির হাতে উঠল আইপিএল ট্রফি। এই জয় কেবল আরসিবি-র নয়, কোটিরো ভক্তের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়েছে।