‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) যখন দাবি করলেন যে, বাংলার দুর্গাপূজার ইউনেস্কো স্বীকৃতি এসেছে কেন্দ্রের প্রচেষ্টায়, তখন তার তীব্র সমালোচনা করলেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। ষষ্ঠীর সন্ধ্যায় দুর্গাপূজার মণ্ডপ থেকে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে তীব্র কটাক্ষ করেন।
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, সবার কৃতিত্ব কেড়ে নেওয়াটাই নরেন্দ্র মোদীর ‘স্পেশাল কোয়ালিটি’।
‘বাংলায় মোদীর জন্মের আগে থেকে পুজো হয়’
দুর্গাপূজার ইউনেস্কো স্বীকৃতি নিয়ে মোদীর মন্তব্যের জবাবে তৃণমূল সাংসদ বলেন, “বাংলায় নরেন্দ্র মোদীর জন্মের আগে থেকে দুর্গাপুজো হয়। আসলে ওঁর স্বভাব হলো, যা কিছু হবে তার কৃতিত্ব দাবি করা।”
তিনি আরও বলেন, “সারা বিশ্বে দুর্গাপুজো ছড়িয়ে আছে। এটার জন্য নরেন্দ্র মোদীর কৃতিত্ব নেই। হেরিটেজ সম্মান দেওয়ার জন্য হেরিটেজ কমিটি রয়েছে, সেই কমিটিতে নরেন্দ্র মোদীর কোনো হাত নেই।” কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আবারও জোর দিয়ে বলেন, নির্দিষ্ট কয়েকটি বিষয়ের উপর ভিত্তি করেই এই হেরিটেজ স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
করোনা, চন্দ্রাভিযান, অপারেশন সিঁদুর— সব কৃতিত্বই মোদীর?
শুধুমাত্র দুর্গাপূজার স্বীকৃতি নয়, প্রধানমন্ত্রী অন্য অনেক ক্ষেত্রেও কৃতিত্ব নিজে নিতে চেয়েছেন বলে অভিযোগ করেন কল্যাণ। তিনি বলেন:
“করোনার সময় তিনি বলেছিলেন, তাঁর জন্যই করোনা রোধ করা গিয়েছে।”
“চন্দ্র অভিযানের সময়ও দাবি করেছিলেন, তাঁর জন্যই সেটা সম্ভব হয়েছে।”
“এমনকি, ‘অপারেশন সিঁদুর’ নাকি তাঁর জন্যই সাফল্য পেয়েছে। সেই জায়গায় তিনি সেনাবাহিনীর কৃতিত্ব ভুলে নিজের কৃতিত্বের কথাই বলে গেলেন।”
সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মূল কথা একটাই, প্রধানমন্ত্রী একটা কথাই জানেন— “যে যা কাজ করবে সবার কৃতিত্ব উনি কেড়ে নেবেন। এটাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর স্পেশাল কোয়ালিটি।”
অমিত শাহকে নিয়েও কটাক্ষ:
এদিন প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকেও আক্রমণ করেন তৃণমূল সাংসদ। অমিত শাহ কলকাতায় পুজো উদ্বোধনে এসে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ‘সোনার বাংলা’ গড়ার কথা বলেছেন। সে প্রসঙ্গে কল্যাণ কটাক্ষ করে বলেন, “বাংলায় সবার আমন্ত্রণ আছে। উনি যত আসবেন, ততই বাংলায় বিজেপি শেষ হয়ে যাবে।” তিনি সতর্ক করে বলেন, “অমিত শাহরা আসুন অসুবিধা নেই, কিন্তু বাংলার বাইরে বাঙালির আমন্ত্রণ নেই। গুজরাতে বাংলা বললেই বাংলাদেশে পুশব্যাক করে দেবে তাঁরা।”
প্রসঙ্গত, শ্রীরামপুরের পুজোতে মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া পাঞ্জাবি পরেই একাধিক পুজোর উদ্বোধন করেন এই তৃণমূল সাংসদ।