এসি ও ফ্যান একসঙ্গে চালালে কি বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয়? জেনে নিন বিশেষজ্ঞদের মতামত

গ্রীষ্মের অসহ্য গরমে এয়ার কন্ডিশনার (এসি) এখন অনেকেরই নিত্যসঙ্গী। কিন্তু একটানা এসি চালানোর ফলে বিদ্যুতের আকাশছোঁয়া বিল নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভোগেন না এমন মানুষ কমই আছেন। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে অনেকে এসির পাশাপাশি ফ্যানও চালিয়ে রাখেন। তবে প্রশ্ন হল, এসি এবং ফ্যান একসঙ্গে চালালে কি সত্যিই বিদ্যুৎ খরচ কমে, নাকি বেড়ে যায়? এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত এখন আলোচনায়।

ফ্যানের ভূমিকা: শুধু ঠান্ডা নয়, বাতাস সঞ্চালনেও
সাধারণত, এসি চালানোর প্রধান উদ্দেশ্য থাকে ঘরের ভেতরের বাতাসকে ঠান্ডা করা। এসি যখন ঘর ঠান্ডা করে, তখন সেই ঠান্ডা বাতাস ঘরের কোণায় কোণায় সমানভাবে ছড়িয়ে পড়া জরুরি। এখানেই ফ্যানের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদিও সিলিং ফ্যান চালানোর জন্যও বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়, তবে এসির তুলনায় তা নগণ্য। যখন এসি এবং ফ্যান একসঙ্গে চালানো হয়, তখন ফ্যান এসির তৈরি করা ঠান্ডা বাতাসকে দ্রুত এবং সমানভাবে পুরো ঘরে ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করে। এর ফলে এসিকে ঘর ঠান্ডা করার জন্য দীর্ঘক্ষণ ধরে চলতে হয় না, বা কম তাপমাত্রায় (যেমন ১৬-২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) চালানোর প্রয়োজন হয় না।

সঠিক তাপমাত্রা ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়
একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অনেকেই এসি ২০ বা ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে চালিয়ে ফ্যান ব্যবহার করেন। এক্ষেত্রে বিদ্যুতের বিল কমার বদলে বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। এর কারণ হল, কম তাপমাত্রায় এসিকে অনেক বেশি শক্তি খরচ করতে হয় ঘরকে সেই তাপমাত্রায় নামিয়ে আনতে।

তবে, যদি এসির তাপমাত্রা আরামদায়ক ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সেট করে ফ্যান চালানো হয়, তাহলে ঠান্ডা বাতাস দ্রুত সঞ্চালিত হবে এবং ঘর ঠান্ডা অনুভূত হবে। এতে এসি কম্প্রেসারের উপর চাপ কম পড়বে এবং বিদ্যুৎ খরচও উল্লেখযোগ্যভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।

মূলত, ফ্যান নিজে বাতাস ঠান্ডা না করলেও, এটি এসির তৈরি করা ঠান্ডা বাতাসকে কার্যকরীভাবে ‘সার্কুলেট’ বা সঞ্চালন করে। এর ফলে এসি কম শক্তি ব্যবহার করেও কাঙ্ক্ষিত শীতলতা ধরে রাখতে পারে, যা বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সহায়ক হয়। তাই গরম থেকে মুক্তি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুতের বিল নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে সঠিক তাপমাত্রায় এসি চালানোর পাশাপাশি ফ্যান ব্যবহার করা একটি বুদ্ধিমানের কাজ।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy