পশ্চিমবঙ্গে ‘সিভিক ভলান্টিয়ার’দের ভূমিকা নিয়ে শাসক ও বিরোধীদের মধ্যে দীর্ঘদিনের চাপানউতোর। এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ‘হিন্দু-বিরোধী’ রাজনীতির অভিযোগ আরও জোরালো করতে সেই সিভিক ভলান্টিয়ারদেরই পাশে দাঁড়ানোর কৌশল নিল বিজেপি।
বৃহস্পতিবার নন্দীগ্রামে সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী চাঞ্চল্যকর দাবি করেন। তিনি বলেন, নিছক হিন্দু হওয়ার ‘অপরাধে’ নন্দীগ্রামের ন’জন সিভিক ভলান্টিয়ারকে তাঁদের বাড়ি থেকে বহুদূরে বদলি করা হয়েছে।
‘হিন্দু হওয়ার অপরাধে বদলি’: শুভেন্দু অধিকারীর দাবি
শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “পূর্ব মেদিনীপুরের ১৭ জন সিভিক ভলান্টিয়ারকে বদলি করা হয়েছে। স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের দেওয়া রিপোর্টের ভিত্তিতে এই বদলি হয়েছে।” তাঁর দাবি, “এই ১৭ জনের মধ্যে ন’জন নন্দীগ্রামের। এবং তাঁরা সবাই হিন্দু।”
শুভেন্দু সংযোজন করেন, “এই ৯ জনের মধ্যে কয়েকজন আবার তৃণমূল পরিবারের ছেলে। কিন্তু হিন্দু হওয়ার অপরাধে তাঁদেরও ছাড় দেওয়া হয়নি।”
আন্দোলনের হুঁশিয়ারি:
এই বদলির বিরুদ্ধে তীব্র হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। তিনি বলেন, “এই হিন্দু সিভিক ভলান্টিয়ারদের উপরে এই অত্যাচারের বিরুদ্ধে আমরা প্রথমে নন্দীগ্রাম থানায় এবং পরে এসপি অফিস অভিযান করব। আমাদের সবার হাতে গেরুয়া ধ্বজা থাকবে। সব দলের হিন্দুদের এই অভিযানে সামিল হওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে। এক সপ্তাহের মধ্যে এই বদলি প্রত্যাহার করতে হবে জেলা প্রশাসনকে।“
তৃণমূলের পালটা খোঁচা:
শুভেন্দু অধিকারীর এই অভিযোগকে ‘সাম্প্রদায়িক রাজনীতি’ বলে খোঁচা দিয়েছেন তৃণমূল মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “শুভেন্দুবাবু হয়তো জানেন না, নন্দীগ্রামে ভূমিরক্ষা আন্দোলনে অনেক মুসলমানেরও প্রাণ গিয়েছিল। উনি সব কিছুকে ধর্মের রং দিয়ে দেখছেন।”
অরূপ চক্রবর্তী আরও কটাক্ষ করে বলেন, “২০২৬–এ বাংলার মানুষ যখন বিজেপির উপরে এসআইআর (Special Intensive Revision) করবে, তখন প্রথম নামটা শুভেন্দু অধিকারীর বাদ যাবে। কারণ, বিজেপি ৩০টি আসনও পাবে না। এ রাজ্যের মানুষ শপথ নিয়েছেন, একজন ধর্মনিরপেক্ষ মানুষকে তাঁরা বিরোধী দলনেতার চেয়ারে বসাবেন।”