উত্তরপ্রদেশের হাপুরের গড়মুক্তেশ্বর এলাকায় চাঞ্চল্যকর এক ঘটনা সামনে এসেছে। একটি নকল ‘ডেডবডি’ ঘিরে আসল প্রতারণার ছক ফাঁস হল গঙ্গা তীরবর্তী শ্মশানে। ৫০ লাখ টাকার বিমা ক্লেইম করার জন্য চার যুবক এই প্রতারণার চেষ্টা চালাচ্ছিল বলে অভিযোগ। ঘটনার সঙ্গে যুক্ত দুই অভিযুক্তকে ইতিমধ্যেই পুলিশ পাকড়াও করেছে।
জানা গিয়েছে, বুধবার সন্ধ্যায় গড়মুক্তেশ্বর শ্মশানে একটি দেহ নিয়ে আসে চার যুবক। তারা সেখানে তড়িঘড়ি শেষকৃত্য সম্পন্ন করতে চাইছিল। সেই জন্য ঘি, কাঠসহ অন্যান্য সামগ্রীও আনা হয়েছিল। কিন্তু তাদের অতিরিক্ত তৎপরতা দেখে শ্মশানে থাকা পৌরকর্মীর সন্দেহ হয়।
এক পৌরকর্মী জানান, যখন তারা দেহটি শেষকৃত্যের জন্য নিয়ে যাচ্ছিল, তখন তার ওজন অস্বাভাবিকভাবে হালকা মনে হয়েছিল। এরপরই সন্দেহ গাঢ় হয়। তিনি মৃতের মুখ থেকে কাপড় সরাতে বললেও, যুবকেরা তাতে রাজি হয়নি। ভুয়ো কারবারের আঁচ পেয়ে দ্রুত স্থানীয়রা জড়ো হন এবং পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে দুই অভিযুক্তকে হাতেনাতে পাকড়াও করে। অপর দুইজন ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
৫০ লাখ টাকার বিমা ক্লেইমের মাস্টারপ্ল্যান:
পুলিশ সূত্রে খবর, আটক দুই যুবক কমল সোমানি ও আশিষ খুরানা দিল্লির বাসিন্দা। তারা একটি ডামি পুতুলকে মৃতদেহ সাজিয়ে শেষকৃত্য সম্পন্ন করার চেষ্টা করছিল। তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল নকল ডেথ সার্টিফিকেট তৈরি করে ৫০ লক্ষ টাকার বিমা ক্লেইম করা।
তদন্তে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত কমল সোমানির বাজারে প্রায় ৫০ লাখ টাকার ঋণ হয়ে গিয়েছিল। সেই ঋণ শোধ করতেই সে এই ‘মাস্টারপ্ল্যান’ তৈরি করে। পরিকল্পনাকে নিখুঁত করতে কমল তার পুরনো কর্মচারী অংশুল কুমারের আধার ও প্যান কার্ড নিজের কাছে রেখেছিল। অংশুলের অজান্তেই তাঁর নামে ৫০ লক্ষ টাকার বিমা করিয়েছিল কমল। এই বিমার টাকা হাতানোর জন্যই একটি ডামিকে অংশুল সাজিয়ে শ্মশানে নিয়ে এসেছিল তারা।
তবে পুলিশের তদন্তে জানা গিয়েছে, এই পুরো বিষয়টি সম্পর্কে অংশুল কুমার কিছুই জানত না। বর্তমানে সে নিজের বাড়িতে সম্পূর্ণ সুস্থ আছে। নিজের ‘মৃত্যু’র নাটক এবং বিমা প্রতারণার ঘটনা জানতে পেরে অংশুল কুমার স্তম্ভিত। পলাতক বাকি দুই অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।