মেঘালয়ের নৈসর্গিক সৌন্দর্য্যে ঘেরা পাহাড়ের কোলে ঘটে যাওয়া বীভৎস রাজা রঘুবংশী হত্যাকাণ্ডের কিনারা করতে এবার মাঠে নামল মেঘালয় পুলিশ। ঘটনার পুনর্নির্মাণ করতে গিয়েই তদন্তকারীরা খুঁজে পেলেন এক নতুন সূত্র – রাজাকে খুন করতে ব্যবহৃত হয়েছিল একটি নয়, বরং দুটি ধারালো অস্ত্র!
ওয়েই সাওডং জলপ্রপাতে ফিরল সেই নারকীয় রাতের দৃশ্য
মঙ্গলবার মেঘালয় পুলিশ রাজা রঘুবংশী হত্যাকাণ্ডে ধৃত পাঁচ অভিযুক্তকে নিয়ে পূর্ব খাসি পাহাড়ি এলাকার ওয়েই সাওডং জলপ্রপাতের কাছে সেই অভিশপ্ত ঘটনাস্থলে যায়। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন রাজার স্ত্রী সোনম, সোনমের প্রেমিক রাজ কুশাওয়া, এবং তিন জন ভাড়াটে খুনি। এখানেই নৃশংসভাবে রাজাকে খুন করে গভীর খাদে ফেলে দেওয়া হয়েছিল।
যে সময়ে রাজাকে খুন করা হয়েছিল, সেই একই সময়ে ধৃত পাঁচজনকে ঘটনাস্থলে নিয়ে যায় পুলিশ। প্রতিটি পদক্ষেপ খুঁটিয়ে দেখা হয়। সোনম এবং খুনিরা কে কোথায় দাঁড়িয়ে ছিল, কীভাবে রাজাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়— পুনর্নির্মাণের সময় সবই পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যবেক্ষণ করেন তদন্তকারীরা। পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, কেবল হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থলই নয়, তার আগে রাজা, সোনম এবং খুনিরা যে যে জায়গা দিয়ে গিয়েছিল, সেই সবকটি স্থানেও ধৃতদের নিয়ে গিয়ে সম্পূর্ণ ঘটনাক্রম সাজানো হয়।
রহস্যের নতুন মোড়: দ্বিতীয় অস্ত্রের খোঁজ
পুনর্নির্মাণের সময়ই তদন্তকারীদের হাতে আসে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। ধৃতরা স্বীকার করেছে, রাজাকে খুন করতে একটি নয়, দুটি দা ব্যবহার করা হয়েছিল। ইতিমধ্যেই একটি দায়ের খোঁজ মিলেছে। খুনে ব্যবহৃত দ্বিতীয় অস্ত্রটির সন্ধানে জোর কদমে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। দ্বিতীয় এই অস্ত্রের খোঁজ পেলে তদন্তে আরও নতুন দিশা মিলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
রাজা রঘুবংশী হত্যাকাণ্ড মেঘালয়ের পাশাপাশি প্রতিবেশী রাজ্যেও ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছিল। এক ব্যবসায়ীকে নৃশংসভাবে খুন করে দেহ লোপাট করার এই ঘটনায় স্ত্রী ও তার প্রেমিকের জড়িত থাকার অভিযোগ সামনে আসার পর থেকেই জনমনে নানা প্রশ্ন তৈরি হয়েছিল। পুলিশের এই পুনর্নির্মাণ এবং নতুন তথ্যের উন্মোচন এই মামলার জট খুলতে সাহায্য করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই মামলার প্রতিটি পদক্ষেপে নজর রাখছে রাজ্য পুলিশ।