শিডিউল কাস্ট, শিডিউল ট্রাইব এবং মতুয়া সম্প্রদায় মিলিয়ে এই রাজ্যের ভোটার তালিকা থেকে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ লক্ষ মানুষের নাম বাদ যেতে পারে—এই গুরুতর আশঙ্কা প্রকাশ করেছে শিডিউল কাস্ট ফেডারেশন মতুয়া ধর্ম মহাসংঘ। এই আশঙ্কার ভিত্তিতেই শনিবার তারা প্রথমে রাজভবনে রাজ্যপালের দফতরে এবং পরে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরে স্মারকলিপি জমা দিয়েছে।
ফেডারেশনের দাবি, দেশভাগের সময় এবং তার পরেও বিভিন্ন উৎপীড়নের কারণে পূর্ব বাংলা থেকে এই বাংলায় আসা বহু মানুষের কাছে বৈধ নথিপত্র নেই, যা দিয়ে তাঁরা স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন বা SIR-এর ফর্ম পূরণ করতে পারেন। নদী ভাঙন বা পুনর্বাসন জনিত কারণেও অনেকে নথি হারিয়েছেন। এর ফলে বিপুল সংখ্যক মানুষের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
শিডিউল কাস্ট ফেডারেশন মতুয়া ধর্ম মহাসংঘের সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় মল্লিক বলেন, “আমরা রাজ্যপালের কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়েছি। আমাদের দাবি হল, SIR-এর সরলীকরণ করে ২০০২ থেকে ২০২৫ পর্যন্ত ভোট দিয়ে যাঁরা সরকার গঠন করেছেন, সেই সব ভোটারের ভোট সুরক্ষিত রাখতে হবে।” তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচন কমিশন যে ১২টি নথি চেয়েছে, তা অনেকেই দেখাতে পারবে না। তাই পরিবারের কারও যদি সেই নথি থাকে, তবে তা ব্যবহার করে সংশ্লিষ্ট ভোটারের নাম সুরক্ষিত করতে হবে। এমনকি, “যদি কারও নাম ২০০২ সালে তালিকায় না থাকে, কিন্তু তাঁদের কাকা, মামা বা জ্যাঠা-জেঠিমা—লতায়-পাতায় পরিবারের কেউ থাকেন, তাঁদের ভোটও সুরক্ষিত রাখতে হবে,” দাবি করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, নভেম্বরের শুরুতে এসআইআর-এর বিরোধিতায় তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ তথা অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি মমতাবালা ঠাকুর আমরণ অনশনের ডাক দিয়েছিলেন। তিনি বাংলাদেশ থেকে বাস্তুচ্যুত সকলের জন্য নিঃশর্ত নাগরিকত্বের দাবি তোলেন। যদিও এই অনশন কর্মসূচিকে ‘ভোট ব্যাংকের রাজনীতি’ বলে কটাক্ষ করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বিজেপি নেতা শান্তনু ঠাকুর, এবং তাঁর দাবি, এই কর্মসূচিতে মতুয়া ভক্তের চেয়ে মুসলমান রোহিঙ্গাদের সংখ্যাই বেশি।