গত ৪ অক্টোবরের বিধ্বংসী বন্যায় ভেঙে যাওয়া জলপাইগুড়ির নাগরাকাটা ব্লকের গুরুত্বপূর্ণ ‘টানাটানি’ সেতুটি অল্প সময়ের মধ্যেই জনসাধারণের জন্য খুলে দিল জেলা প্রশাসন। কুচি ডায়না নদীর উপর এই সেতুটি সংস্কার হওয়ায় বামনডাঙা সহ বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের ভোগান্তির অবসান হলো।
গত ৪ অক্টোবরের এক রাতের তুমুল বৃষ্টিতে ভুটান পাহাড় থেকে নেমে আসা গাঠিয়া নদীর জলে টন্ডু বামনডাঙা, খেরকাটা গ্রাম প্লাবিত হয়েছিল। বন্যার তোড়ে সুলকাপাড়া গ্রামপঞ্চায়েতের অধীনে থাকা এই সেতুর একাংশ ও অ্যাপ্রোচ রোড সম্পূর্ণভাবে ভেসে যাওয়ায় বামনডাঙার সঙ্গে নাগরাকাটার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে দ্রুত সংস্কার
জলপাইগুড়ির জেলাশাসক শামা পারভিন জানান, “গত ৪ অক্টোবর এই টানাটানি সেতুটি ভেঙে যায়। একপাশের সেতু ও অ্যাপ্রোচ রোড জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছিল। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় জেলা পরিষদ ও পূর্ত দফতর দ্রুত কাজ শুরু করে। এক থেকে দেড় কোটি টাকারও বেশি খরচ করে সেতুটি সংস্কার করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা কাজ করে সেতুটিকে চলাচলের যোগ্য করে তুলেছি।”
বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ছাড়টন্ডু, খয়েরবাড়ি সহ বিস্তীর্ণ অঞ্চল। সেতু ভেঙে যাওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের ত্রাণ পৌঁছে দিতে প্রশাসনকে নদীর উপর দিয়ে ট্র্যাক্টরে করে যেতে হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বানভাসি এলাকা পরিদর্শনে আসার আগে অস্থায়ীভাবে একটি লোহার সিঁড়ি বানানো হয়েছিল, যা বেয়ে তিনি বন্যা কবলিত এলাকায় গিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী চলে যাওয়ার পরই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুরোদমে সেতু তৈরির কাজ শুরু হয়।
দেড় মাসেরও কম সময়ের মধ্যে রাতের পর রাত কাজ করে অ্যাপ্রোচ রোড ও ভগ্নপ্রায় সেতুর সংস্কার করা হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, এই সংস্কারে এক কোটি টাকারও বেশি খরচ হয়েছে। সেতুতে নতুন করে ৮টি সোলার লাইট লাগানো হয়েছে এবং ৪০ মিটার নতুন অ্যাপ্রোচ রোড তৈরি করা হয়েছে। সেতুটি দ্রুত সংস্কার করে জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়ায় স্থানীয়রা ব্যাপক খুশি। উল্লেখ্য, ৪ অক্টোবরের সেই ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে উত্তরবঙ্গে অন্তত ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছিল।