বছরের ৩৬৫ দিনই পুজো! নিউটাউনে মমতার উপহার ‘দুর্গা অঙ্গন’, কী কী চমক থাকছে?

বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো এখন আর মাত্র চার দিনের নয়, বরং সারা বছরের। সোমবার শহরবাসীর সেই স্বপ্নপূরণের পথে বড় পদক্ষেপ নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিউটাউনের ইকো পার্কের ১ নম্বর গেটের কাছে, অ্যাকশন এরিয়া-1A এলাকায় ১৭.২৮ একর জমির ওপর বিশাল ‘দুর্গা অঙ্গন’-এর শিলান্যাস করলেন তিনি।

সারা বছর মিলবে পুজোর আমেজ মুখ্যমন্ত্রী জানান, এই দুর্গা অঙ্গন শুধুমাত্র একটি স্থাপত্য নয়, এটি হবে বাংলার সংস্কৃতির প্রাণকেন্দ্র। এখানে সারা বছরই মা দুর্গার প্রতিমা দর্শনের সুযোগ থাকবে। প্রতিদিন প্রায় ১ লক্ষ দর্শনার্থী এখানে অনায়াসে ভিড় করতে পারবেন। শুধু পুজো দেখা নয়, এখানে নিয়মিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজিত হবে এবং বাংলার স্ব-নির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা তাঁদের তৈরি হস্তশিল্প বিক্রির সুযোগ পাবেন।

স্থাপত্যের বিস্ময়: কী থাকছে দুর্গা অঙ্গনের নকশায়? এদিন মুখ্যমন্ত্রী এই প্রকল্পের বিস্তারিত নকশা তুলে ধরেন। তাঁর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী:

বিশাল আয়তন: প্রায় ২ লক্ষ বর্গফুট জুড়ে তৈরি হচ্ছে এই প্রধান চত্বর। মন্দিরের মাঝের আঙিনাতেই অন্তত ১০০০ জন মানুষ একসাথে বসতে পারবেন।

উচ্চতা ও ঐতিহ্য: মূল গর্ভগৃহের উচ্চতা হবে ৫৪ মিটার। শাস্ত্রীয় নিয়ম মেনে এখানে ১০৮টি দেবদেবীর মূর্তি এবং ৬৪টি সিংহমূর্তি স্থাপন করা হবে।

স্থাপত্যশৈলী: দুর্গা অঙ্গনের চারপাশ দিয়ে তৈরি হচ্ছে ২০ ফুট চওড়া রাস্তা, যা সাজানো থাকবে ১০০৮টি সুসজ্জিত স্তম্ভ এবং শৈল্পিক খিলান দিয়ে।

অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা: মূল মণ্ডপ ছাড়াও থাকবে সিংহদুয়ার, পবিত্র কুণ্ড এবং শিব, গণেশ, লক্ষ্মী ও সরস্বতীর জন্য পৃথক মণ্ডপ। দর্শনার্থীদের জন্য থাকবে প্রসাদ রান্নার ঘর এবং একটি সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক মিউজিয়াম।

প্রকৃতি ও সংস্কৃতির মেলবন্ধন পরিবেশের কথা মাথায় রেখে এখানে ৩০০টি বড় গাছ এবং ১০০০টি ফুলের গাছ লাগানো হবে। পুরো চত্বরটি এমনভাবে নকশা করা হয়েছে যাতে প্রাকৃতিক আলো-বাতাস চলাচলে কোনও বাধা না থাকে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “দুর্গা অঙ্গন হবে এক সাংস্কৃতিক মিলনস্থল, যা দেশ-বিদেশের পর্যটকদের কাছে বাংলার বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যের বার্তা পৌঁছে দেবে।”

এই বিশালাকার প্রকল্পের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একটি বিশেষ ট্রাস্ট গঠন করা হয়েছে, যারা আগামী দিনে এর যাবতীয় দেখভালের দায়িত্ব পালন করবে।

Related Posts

© 2026 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy