স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC)-এর ২০২৫ সালের নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নিয়মের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়েছে। মামলাকারীর আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য্য অভিযোগ করেছেন যে, এসএসসি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করে অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করেছে এবং অভিজ্ঞতার জন্য অতিরিক্ত ১০ নম্বর রেখে সকলের জন্য সমানাধিকারের নীতি লঙ্ঘন করেছে।
আইনজীবীর বিস্ফোরক সওয়াল
শুক্রবার বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে মামলাকারীর আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য্য সওয়াল করেন যে, দুর্নীতির কারণে যে প্যানেল বাতিল হয়েছে, সেখানে অভিজ্ঞতার জন্য ১০ নম্বর দেওয়ার কোনো যুক্তি নেই। তিনি দাবি করেন, সকলের জন্য সমান নম্বরের পরীক্ষা হোক এবং মেধার ভিত্তিতে সেরাদের নির্বাচন করা হোক। একই সঙ্গে, মেয়াদ উত্তীর্ণ প্যানেল থেকে চাকরি পাওয়াদেরও অযোগ্য হিসেবে গণ্য করার আবেদন জানান তিনি।
মামলাকারী পক্ষের আইনজীবী আদালতে জানান, এসএসসি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মানছে না। তিনি ২০২৫ রুলের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং বলেন, ২৯ মে রুল তৈরি ও ৩০ মে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে কীভাবে নতুন শূন্যপদ তৈরি হলো, তা বিবেচ্য। নতুন বিজ্ঞপ্তিতে ‘ম্যানার অফ সিলেকশন’-এ অ্যাকাডেমিক যোগ্যতা, ইন্টারভিউ, অভিজ্ঞতার নম্বর (লেকচার ডেমোনস্ট্রেশন) থাকার কথা বলা হলেও, নতুন নিয়মে শিক্ষাগত যোগ্যতার অংশ উধাও করা হয়েছে এবং শুধু গ্র্যাজুয়েশনের কথা বলা হয়েছে।
রাজ্যের প্রতি বিচারপতি সিনহার প্রশ্ন
আদালতে রাজ্য সরকারের আইনজীবীর উদ্দেশে বিচারপতি অমৃতা সিনহা বলেন, “আপনারা বয়সসীমায় ছাড় এমনভাবে তৈরি করলেন, যার জন্য অনেক চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষক নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশই নিতে পারলেন না।”
মামলাকারীরা আরও অভিযোগ করেন, আর্টিকেল ১৪ (আইনের দৃষ্টিতে সমতা) ও আর্টিকেল ১৬ (সরকারি চাকরিতে সমানাধিকার) লঙ্ঘন করে ১০ নম্বর দিয়ে অভিজ্ঞদের অতিরিক্ত সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে নতুন প্রার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছেন। এমনকি, এখনও দুর্নীতিগ্রস্ত শিক্ষকদের থেকে টাকা ফেরত নেওয়া হয়নি।
মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১ ডিসেম্বর, সোমবার ধার্য হয়েছে। এদিকে, ২০২৫ গ্ৰুপ সি এবং গ্ৰুপ ডি নতুন নিয়োগেও অভিজ্ঞতার জন্য ৫ নম্বর রাখা হয়েছে, যা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের হওয়া মামলার শুনানি হবে ২ ডিসেম্বর।