“আমি শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত নেব”- ইরানের উপর হামলার সিদ্ধান্ত ট্রাম্পের হাতে, মধ্যপ্রাচ্যে রুদ্ধশ্বাস পরিস্থিতি

মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের দামামা যখন তুঙ্গে, ইরান ও ইজরায়েলের সংঘাত যখন ৫ম দিনে পৌঁছেছে, ঠিক তখনই এক বিস্ফোরক তথ্য সামনে আনলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেই। সিএনএন-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য সামরিক হামলা নিয়ে তিনি ‘শেষ মুহূর্তে’ সিদ্ধান্ত নেবেন। ট্রাম্পের এই মন্তব্য বিশ্বজুড়ে এক নতুন রুদ্ধশ্বাস অপেক্ষার জন্ম দিয়েছে।

গত মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে সিএনএন-এর সাংবাদিক কেইটলান কলিন্সকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প খোলাখুলি বলেন, “(ইরান-ইজরায়েল সংঘাত ইস্যুতে) কী করতে হবে বা করা যেতে পারে— এ ব্যাপারে আমার কিছু আইডিয়া আছে, কিন্তু এখনও আমি কোনোটিই চূড়ান্ত করিনি। আমি বরাবরই শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত নিই, কারণ, আপনি জানেন, পরিস্থিতি যে কোনো সময় বদলে যেতে পারে। বিশেষ করে যুদ্ধের সময়। অনেক সময়েই যুদ্ধের সার্বিক গতিপ্রকৃতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে পরিস্থিতিও বদলে যায়।”

ট্রাম্পের এই উক্তি থেকে স্পষ্ট যে, তিনি পরিস্থিতির প্রতি গভীরভাবে নজর রাখছেন এবং যেকোনো তাৎক্ষণিক পরিবর্তনকে তার সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলতে দিতে চান।

ঘটনার সূত্রপাত হয় গত বুধবার, ১৮ জুন, যখন ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে সংঘাতের পঞ্চম দিনে ট্রাম্প ইরানে মার্কিন সামরিক অভিযানের প্রাথমিক অনুমোদন দেন বলে খবর আসে। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এই হামলার চূড়ান্ত নির্দেশ তিনি এখনও দেননি।

ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ একজন কর্মকর্তার মতে, ট্রাম্প এখনও ‘অপেক্ষা’ করছেন। তিনি দেখতে চাইছেন যে, ইরান শেষ পর্যন্ত তাদের পারমাণবিক প্রকল্প নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে সমঝোতায় আসতে রাজি হয় কিনা। এই কৌশলকে অনেকেই ইরানের উপর চাপ সৃষ্টির একটি উপায় হিসেবে দেখছেন, যাতে তারা তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনায় বসতে বাধ্য হয়।

ওই কর্মকর্তা আরও জানান, চলতি সপ্তাহে হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প তার সামরিক উপদেষ্টাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকগুলোতে ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য হামলা সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি পরিকল্পনা তার সামনে তুলে ধরা হয়েছে। কিন্তু প্রেসিডেন্ট কোনো সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত দেননি, যা তার ‘শেষ মুহূর্তের সিদ্ধান্ত’ নেওয়ার প্রবণতাকে আরও জোরালো করে।

সিএনএন সূত্রে পাওয়া এই খবর মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান উত্তেজনাকে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। একদিকে ইজরায়েলের সঙ্গে ইরানের ক্রমবর্ধমান সংঘাত, অন্যদিকে আমেরিকার সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ছায়া – এই পুরো পরিস্থিতি বিশ্বজুড়ে এক গভীর উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই ‘শেষ মুহূর্তের সিদ্ধান্ত’ কোন দিকে মোড় নেবে, এবং তা মধ্যপ্রাচ্যের ভবিষ্যতকে কিভাবে প্রভাবিত করবে, তা দেখার জন্য এখন অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে গোটা বিশ্ব।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy