অবশেষে সত্যিই শীতের কামড় অনুভব করতে চলেছেন বঙ্গবাসী। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের (Alipore Weather Office) পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি সপ্তাহের শেষ দিক থেকেই রাজ্যে প্রবেশ করতে শুরু করবে প্রকৃত শীত। দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘দিতওয়াহ’ (Ditwah) শীতের আগমন সাময়িকভাবে আটকে দিলেও, সেটি সরে যাওয়ায় এখন শীত তার স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে আসছে।
কলকাতায় পারদ নামছে ১৫ ডিগ্রির নীচে: গত কয়েক দিন কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশেপাশে ঘোরাফেরা করছিল। সোমবার তা সামান্য বেড়ে ১৮ ডিগ্রিতে দাঁড়ালেও, আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, পরবর্তী চার দিনে রাতের তাপমাত্রা ২ থেকে ৪ ডিগ্রি পর্যন্ত কমতে পারে। সেই হিসেবে সপ্তাহান্তে কলকাতার তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও নীচে নেমে যেতে পারে।
পাশাপাশি, হাওড়া, হুগলি, নদিয়া এবং উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার মতো পার্শ্ববর্তী জেলাগুলিতে শীত আরও তীব্র হতে পারে। এই জেলাগুলিতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ থেকে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নামার পূর্বাভাস রয়েছে।
ভোরে ঘন কুয়াশা এবং বৃষ্টির পূর্বাভাস: শুধু ঠান্ডাই নয়, সঙ্গে থাকবে ঘন কুয়াশার দাপট। বিশেষ করে উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার এবং মালদহে ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত মাঝারি ঘনত্বের কুয়াশায় ঢেকে যাবে বিস্তীর্ণ এলাকা। এর ফলে দৃশ্যমানতা কমে প্রায় ২০০ মিটারের কাছাকাছি নেমে আসতে পারে। যদিও সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই কুয়াশা কেটে আকাশ পরিষ্কার হয়ে যাবে।
আবহাওয়া দফতর আরও জানিয়েছে, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান এবং বীরভূমের কিছু এলাকায় হালকা বৃষ্টিপাত হতে পারে। তবে রাজ্যের বাকি জেলাগুলিতে আবহাওয়া শুষ্কই থাকবে।
দীর্ঘমেয়াদী শৈত্যপ্রবাহের সতর্কতা (লা নিনা): আইএমডি (IMD)-এর দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস অনুযায়ী, ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি এই পুরো শীতকালে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। বিশেষত মধ্য ভারত, উত্তর-পশ্চিম ভারত এবং পূর্বোত্তর ভারতে কড়া ঠান্ডা পড়ার সম্ভাবনা প্রবল। বর্তমানে দুর্বল লা নিনা (La Niña) পরিস্থিতি চলছে, যা শীতকালেও বজায় থাকার সম্ভাবনা প্রায় ৬২ শতাংশ। লা নিনার প্রভাবে রাতের তাপমাত্রা আরও কমবে এবং শৈত্যপ্রবাহের স্থায়িত্বও বাড়তে পারে। এর ফলে ঘন কুয়াশা, জনস্বাস্থ্যের সমস্যা ও পরিবহণে বিঘ্ন ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।