বিহারে বিধানসভা নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশনের ‘বিশেষ নিবিড় সংশোধন’ (SIR) প্রক্রিয়াকে বেশিরভাগ মানুষই স্বাগত জানাচ্ছেন। সম্প্রতি ইন্ডিয়া টুডে-সি ভোটার মুড অফ দ্য নেশন (MOTN) নামে একটি সমীক্ষায় এই তথ্য উঠে এসেছে। সমীক্ষা অনুযায়ী, বিহারের বেশিরভাগ মানুষ মনে করেন যে, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্যই নির্বাচন কমিশন এই পদক্ষেপ নিয়েছে।
সমীক্ষায় অংশ নেওয়া প্রায় ৫৮ শতাংশ মানুষ মনে করেন যে, ভোটারদের ভোট দেওয়ার অধিকার নিশ্চিত করার জন্যই কমিশন এই সংশোধনী এনেছে। তবে, ১৭ শতাংশ মানুষ মনে করেন এটি শাসক দলকে সুবিধা দেওয়ার জন্য করা হয়েছে, আর ১২ শতাংশ মানুষ এই প্রক্রিয়াকে সন্দেহের চোখে দেখছেন।
বিরোধীদের প্রতিবাদ ও ‘ভোট চোরি যাত্রা’
নির্বাচন কমিশন এখনও ভোটের তারিখ ঘোষণা না করলেও, এই SIR প্রক্রিয়া নিয়ে বিরোধীরা ক্রমাগত কমিশনকে আক্রমণ করছে। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এবং আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব যৌথভাবে ‘ভোট চোরি যাত্রা’ বের করেছেন। তাঁরা রাজ্যজুড়ে পদযাত্রা করে ভোটার তালিকার এই বিশেষ সংশোধনী নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। এই যাত্রায় রাহুল গান্ধী বলেন যে, মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা এবং কর্ণাটকের মতো বিহারেও তাঁরা ভোট চুরি হতে দেবেন না।
বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR) কী?
বিহারের ভোটার তালিকা সম্পূর্ণভাবে নির্ভুল এবং আপডেট করার জন্য নির্বাচন কমিশন ‘বিশেষ নিবিড় সংশোধন’ প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এই উদ্যোগটি গত জুন মাসে শুরু হয়েছিল। এর প্রধান উদ্দেশ্য হল, প্রত্যেক যোগ্য ভোটারের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা এবং অযোগ্যদের নাম বাদ দেওয়া। এই কাজের জন্য বুথ লেভেল অফিসাররা (BLO) বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য যাচাই করছেন, যা ভোটার তালিকায় মৃত ব্যক্তি, স্থানান্তরিত ভোটার এবং নতুন যোগ্য ভোটারের তথ্য সঠিক করতে সাহায্য করবে।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ২০০৩ সালের পর বিহারে এত বড় আকারের সংশোধন আর হয়নি। তাই এবার ভোটার তালিকায় থাকা অনেক ত্রুটি দূর করা সম্ভব হবে। এখন পর্যন্ত প্রায় ৯৮ শতাংশ ভোটারের তথ্য জমা পড়েছে। এই পুরো প্রক্রিয়াটিকে স্বচ্ছ করতে সব রাজনৈতিক দলের বুথ এজেন্টদেরও যুক্ত করা হয়েছে।
এই সমীক্ষার জন্য ১ জুলাই থেকে ১৪ আগস্ট পর্যন্ত প্রায় ২ লাখেরও বেশি মানুষের মতামত নেওয়া হয়েছিল। এখন সবাই অপেক্ষা করছে, নির্বাচন কমিশন কবে ভোটের তারিখ ঘোষণা করে।