প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভারত সফর বাতিল হওয়ায় নানা ধরনের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। শোনা গিয়েছিল, চলতি বছরের শেষ দিকে তিনি ভারতে আসবেন ‘কোয়াড’ (Quad) সম্মেলনে যোগ দিতে। কিন্তু এখন জানা যাচ্ছে, তিনি আর ভারত সফরে আগ্রহী নন। তবে কি বন্ধু নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তার সম্পর্কে কোনও সমস্যা হয়েছে? নাকি এর পেছনে রয়েছে শুল্ক (ট্যারিফ) সংক্রান্ত অন্য কোনো কারণ?
নিউ ইয়র্ক টাইমসের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের শেষে ট্রাম্পের ভারতে আসার কথা ছিল। কিন্তু এখন সেই পরিকল্পনা বাতিল করা হয়েছে। এই খবর নিয়ে ভারত বা আমেরিকার সরকার কোনো কিছু জানায়নি। তবে মনে রাখতে হবে, এই বছরের শেষে ভারতেই কোয়াড সম্মেলন হওয়ার কথা। দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ট্রাম্প আমেরিকাতেই একটি কোয়াড বৈঠকের আয়োজন করেছিলেন।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে গত মে মাসে যে চার দিনের সংঘর্ষ হয়েছিল, ট্রাম্প বারবার দাবি করছিলেন যে তিনিই সেই সংঘর্ষ থামিয়েছেন। কিন্তু ভারত বারবার তার এই দাবিকে ভুল বলেছে। এই ঘটনাটাই দুই দেশের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হওয়ার প্রধান কারণ। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে যে এই কারণে মোদী ট্রাম্পের উপর বিরক্ত ছিলেন।
৩৫ মিনিটের ফোন কল
গত ১৭ জুন নরেন্দ্র মোদী এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে ফোনে ৩৫ মিনিট ধরে কথা হয়। ওই সময় মোদী জি-৭ (G7) সম্মেলনে যোগ দিতে কানাডায় ছিলেন, যেখানে ট্রাম্পও উপস্থিত ছিলেন। তবে তাদের দেখা হওয়ার আগেই ট্রাম্প ওয়াশিংটনে ফিরে যান। এরপরই তাদের মধ্যে ফোনে কথা হয়।
ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্রি জানান, মোদী ট্রাম্পকে স্পষ্ট করে বলেছিলেন যে ভারত-পাকিস্তান সমস্যার মধ্যে আমেরিকা কোনো মধ্যস্থতা করুক, ভারত তা চায় না। তাদের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে কোনো কথা হয়নি। যুদ্ধবিরতি হয়েছে সরাসরি ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে। আসলে পাকিস্তানের অনুরোধেই এই যুদ্ধবিরতি হয়েছিল।
শান্তি পুরস্কারের দাবি
নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৭ জুনের সেই ফোন কলে ট্রাম্প আবার দাবি করেন, ভারত-পাকিস্তানের সংঘর্ষ তিনিই থামিয়েছেন। তিনি আরও জানান যে পাকিস্তান তাকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করছে। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে যে ট্রাম্প মোদীর কাছেও তাকে নোবেল শান্তি পুরস্কারে মনোনীত করার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। তাহলে কি সেই অনুরোধ না মানার কারণেই মোদীর উপর ট্রাম্প রেগে আছেন? এই নিয়েই এখন সবার মধ্যে জল্পনা চলছে।