বর্ষার শুরুতেই বিপর্যয়! প্রবল বৃষ্টির জেরে কালিম্পংয়ের ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে ধস নেমে কার্যত স্তব্ধ হয়ে গেছে উত্তরবঙ্গ থেকে সিকিমের সড়ক যোগাযোগ। দুটি ভিন্ন স্থানে ধস নামায় পরিস্থিতি আরও গুরুতর, যার ফলে আটকা পড়েছেন অসংখ্য পর্যটক ও নিত্যযাত্রী। দ্রুত সিকিম বা শিলিগুড়ি পৌঁছানোর চেষ্টায় অনেকেই এখন বিকল্প পথের সন্ধান করছেন।
১০ নম্বর জাতীয় সড়কের গুরুত্বপূর্ণ অংশ, কালিম্পংয়ের তিস্তা বাজারের কাছে মেল্লি ও লিখুভীর সংলগ্ন মামখোলায় এই ভয়াবহ ধস নেমেছে। পাহাড় থেকে বড় বড় বোল্ডার ও মাটির স্তূপ গড়িয়ে এসে সরাসরি জাতীয় সড়কের উপর পড়েছে। সকালে একটি পণ্যবাহী ট্রাক ধসের কবলে পড়ে উল্টে যায়, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে। এই ঘটনার জেরে বাংলা ও সিকিমের মধ্যে সড়ক পথে যোগাযোগ প্রায় সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। প্রশাসন ভারী যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে এবং ধস সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করার কাজ শুরু করেছে। তবে আবহাওয়া দফতর আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়ায়, নতুন করে ধস নামার আশঙ্কা রয়েছে, যা মেরামতের কাজকে বিলম্বিত করতে পারে।
আটকা পড়া পর্যটকদের জন্য বিকল্প পথ:
যেহেতু ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে, তাই সিকিম থেকে শিলিগুড়ি বা অন্যান্য গন্তব্যে যাওয়ার জন্য পর্যটকদের বিকল্প পথ বেছে নিতে হচ্ছে। কিছু সম্ভাব্য বিকল্প রাস্তা নিচে দেওয়া হলো:
১. সেবক হয়ে ডুয়ার্স: শিলিগুড়ি থেকে সেবক হয়ে ডুয়ার্সের রাস্তা ধরে যাওয়া যেতে পারে। এই রাস্তাটি পাহাড়ি বাঁক এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর, যা ভ্রমণের অভিজ্ঞতাকে ভিন্ন মাত্রা দিতে পারে।
২. আলগাড়া-লাভার রাস্তা: শিলিগুড়ি থেকে গ্যাংটক যাওয়ার জন্য এটি একটি পরিচিত বিকল্প পথ, যা বর্তমানে অনেক পর্যটক ব্যবহার করছেন।
৩. পাসবু হয়ে সিকিম: দার্জিলিং, পাসবু এবং কালিম্পং হয়েও সিকিমে পৌঁছানো সম্ভব। যদিও এই রাস্তাটি কিছুটা দীর্ঘ এবং সময়সাপেক্ষ হতে পারে।
৪. নবনির্মিত ৭৯৪ জাতীয় সড়ক: শিলিগুড়ি থেকে গ্যাংটক যাওয়ার জন্য ৭৯৪ নম্বর জাতীয় সড়ক নামে একটি নতুন বিকল্প রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে। এই রাস্তাটি সম্পূর্ণ হলে সিকিম থেকে শিলিগুড়ি যাতায়াত আরও সহজ ও দ্রুত হবে। যদিও এটি এখনও সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত কি না, তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের থেকে জেনে নেওয়া উচিত।
এগুলি ছাড়াও, স্থানীয় ট্যাক্সি বা ব্যক্তিগত গাড়ির মতো পরিবহণ ব্যবহার করে উল্লেখিত পথগুলি ধরে যাতায়াত করা যেতে পারে। তবে, প্রতিটি বিকল্প পথের বর্তমান অবস্থা এবং সময়সীমা সম্পর্কে যাত্রা শুরুর আগে স্থানীয় প্রশাসন বা পরিবহন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে নিশ্চিত হয়ে নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের এই সময়ে, পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।