সামনেই বিধানসভা নির্বাচন এবং রাজ্যে এসআইআর (SIR) প্রক্রিয়ার আবহে জনসংযোগ বাড়াতে রবিবার বীরভূমের তারাপীঠে অনুষ্ঠিত হলো তৃণমূল কংগ্রেসের মহিলা কর্মী সম্মেলন। সেখানেই পঞ্চায়েত স্তরে মহিলাদের দায়বদ্ধতা নিয়ে অত্যন্ত বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায় (Satabdi Roy)।
শতাব্দী রায়ের হুঁশিয়ারি
রামপুরহাট ২ নম্বর ব্লক মহিলা কর্মী সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে শতাব্দী রায় মহিলা জনপ্রতিনিধিদের আরও স্বাধীনভাবে দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন:
“প্রচুর পঞ্চায়েতের সদস্যা এবং প্রধান মহিলা। কিন্তু ক’জন পঞ্চায়েত সদস্যা বা প্রধান নিজে পঞ্চায়েতে গিয়ে মানুষের জন্য কাজ করেন? বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাঁর স্বামী, ভাই কিংবা শ্বশুর এসে কাজ করে। এটা ঠিক নয়।”
সাংসদ বলেন, সাধারণ মানুষ তাঁদের যে ক্ষমতা দিয়েছে, তা যথাযথভাবে ব্যবহার করা উচিত। তিনি জানান, একবার এক মহিলা প্রার্থীর প্রচারে বেরিয়েছিলেন, কিন্তু সেখানে প্রার্থীকে দেখা যায়নি। তাঁর স্বামী জানান, “বউ বাড়িতে রুটি বানাচ্ছে।”
শতাব্দী রায়ের স্পষ্ট বার্তা:
“তাই বলছি যারা পারবেন না, তারা ভোটে দাঁড়াবেন না। যারা নিজে কাজ করতে পারবেন তাদের সামনে নিয়ে আসুন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর কত ধাক্কা দিয়ে মহিলাদের এগিয়ে নিয়ে যাবেন?”
এসআইআর নিয়ে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের আক্রমণ
এই সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইনমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য (Chandrima Bhattacharya)। তিনি এসআইআর প্রক্রিয়ার তীব্র বিরোধিতা করেন এবং বিজেপিকে সরাসরি চক্রান্তের দায়ে অভিযুক্ত করেন।
চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য প্রশ্ন তোলেন:
“পাঁচটি রাজ্যে ভোট হচ্ছে। কিন্তু বিজেপি শাসিত অসমকে বাদ দিয়ে চারটি রাজ্যে এসআইআর হচ্ছে। এটাই বিজেপির চক্রান্ত।”
তিনি আরও প্রশ্ন তোলেন, বাংলাদেশের নাগরিক যদি শুধু পশ্চিমবঙ্গেই ঢোকে, তাহলে মায়ানমারের সঙ্গে সীমান্ত থাকা সত্ত্বেও কেন শুধু বাংলার সঙ্গে সীমানা নেই? তিনি দাবি করেন, এসব করে তৃণমূলকে হারানো যাবে না।
এছাড়াও এই সভায় ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূল মহিলা কংগ্রেসের জেলা সভানেত্রী সাহারা মণ্ডল, এবং বোলপুরের সাংসদ অসিত মাল উপস্থিত ছিলেন। তবে হাঁসনের বিধায়ক অশোক চট্টোপাধ্যায়ের অনুপস্থিতি নিয়েও গুঞ্জন তৈরি হয়েছে।