মার্কিন প্রেসিডেন্টের আমন্ত্রণ ফিরিয়ে ওড়িশায় মোদী: ‘মহাপ্রভুর আশীর্বাদ’কেই দিলেন অগ্রাধিকার
ভুবনেশ্বর, ২০ জুন ২০২৫: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওয়াশিংটনে নৈশভোজের আমন্ত্রণ সবিনয়ে প্রত্যাখ্যান করে ওড়িশায় তাঁর ‘মহাপ্রভুর পবিত্র ভূমিতে’ ফিরে আসাকেই অগ্রাধিকার দিয়েছেন। ভুবনেশ্বরে এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী নিজেই এই চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেন, যা রাজনৈতিক মহলে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
ওড়িশায় নবগঠিত বিজেপি সরকারের প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এই জনসভায় প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, দু’দিন আগেই তিনি কানাডায় জি-সেভেন সম্মেলনে যোগ দিতে গিয়েছিলেন। সেখানেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডাম্প তাঁকে ফোন করে ওয়াশিংটনে এসে একসঙ্গে নৈশভোজ এবং কিছু বিষয়ে আলোচনার প্রস্তাব দেন।
প্রধানমন্ত্রী মোদীর কথায়, “আমি ওঁকে ধন্যবাদ জানিয়েই জানিয়েছি, ওড়িশার এই পবিত্র ভূমিতে মহাপ্রভুর আশীর্বাদ নেওয়াটা আমার কাছে অনেক বেশি জরুরি। আপনাদের ভালোবাসা আর মহাপ্রভুর প্রতি ভক্তিই আমাকে এই পবিত্র ভূমিতে টেনে এনেছে।” তাঁর এই মন্তব্য ওড়িশার জনগণের প্রতি তাঁর গভীর শ্রদ্ধা এবং ধর্মীয় অনুভূতির প্রতিফলন বলে মনে করা হচ্ছে।
ওড়িশায় উন্নয়নের জোয়ার: ১৮,৬০০ কোটি টাকার প্রকল্প উদ্বোধন
২০২৪ সালের জুনে ওড়িশায় বিজেপি সরকার গঠিত হওয়ার পর এটি প্রধানমন্ত্রীর ষষ্ঠ ওড়িশা সফর। এই সফরে তিনি রাজ্যের জন্য মোট ১০৫টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন, যার মোট মূল্য ১৮,৬০০ কোটি টাকারও বেশি। এর মধ্যে পানীয় জল, সেচ ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য পরিকাঠামো, গ্রামীণ রাস্তা ও সেতু, জাতীয় সড়ক এবং রেল পরিকাঠামো সংক্রান্ত একাধিক বড় প্রকল্প রয়েছে।
এছাড়াও, প্রধানমন্ত্রী ‘ওড়িশা ভিশন ডকুমেন্ট’ নামের একটি উন্নয়ন পরিকল্পনা-পত্র প্রকাশ করেন, যা রাজ্যের ভবিষ্যৎ উন্নয়নের রূপরেখা তুলে ধরে।
জনসভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ওড়িশা এখন পরিবর্তনের পথে। উন্নয়নই একমাত্র লক্ষ্য। আপনাদের আশীর্বাদ ও মহাপ্রভুর কৃপায় এই পবিত্র ভূমি এখন নতুন আলোর দিশা দেখাচ্ছে।” তাঁর এই সফর ওড়িশার প্রতি কেন্দ্রের বিশেষ নজর এবং রাজ্যের উন্নয়নে বিজেপি সরকারের প্রতিশ্রুতির ইঙ্গিত বহন করছে। মার্কিন প্রেসিডেন্টের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করে ওড়িশায় উপস্থিত হওয়া মোদীর এই সিদ্ধান্ত স্থানীয় রাজনীতিতে নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক বার্তা দিয়েছে।